যশোরে পাষন্ড ছেলে ও বৌমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন সোনাভান বিবি। স্বামীর মৃত্যুর আগে রেখে যাওয়া জমিই কাল হয়েছিল তার জীবনে। ওই জমি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন ছেলে আরিফ। বাধ্য হয়ে সোনাভান বিবি আদালতে মামলাও করেছিলেন। কিন্তু এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ছেলে আরিফ ও তার স্ত্রী ইভা। তারা সোনাভান বিবিকে মারপিটে রক্তাক্ত জখম করে হত্যার চেষ্টাও করে। শেষমেষ বাধ্য হয়ে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সোনাভান বিবি। এরপরই মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছেলে আরিফ। সোনাভান বিবি হত্যা মামলার তদন্তে উঠে এসেছে এসব তথ্য। পুলিশ ছেলে আরিফ ও তার স্ত্রী ইভা খাতুনকে আটক করেছে। এরপর তারা পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা জানিয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁদপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই হুমায়ুন আহমদ তাদেরকে আটকের পর এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশি প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলে ও বৌ মিলে সোনাভান বিবিকে প্রথমে হত্যা করে। পরবর্তীতে মরদেহ গোপন করতে পাশের একটি বাগানে পুঁতে রাখে। মাকে হত্যার পর নিখোঁজের নাটকও সাজিয়েছিলো তারা।
এরআগে হত্যার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন সোনাভান বিবির ভাই ফতেপুর গ্রামের এজাহার খাঁ। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সোনাভান। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে নিহতের বাড়ির কিছু দূরে একটি বাগানের ভেতর ছড়ানো ছিটানো মাটি দেখতে পান স্বজনরা। তাদের বিষয়টি দেখে সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে তারা পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ এসে মাটি খুড়ে একটি ছোট গর্ত থেকে সোনাভান বিবির মরদেহ উদ্ধার করেন। তবে অজ্ঞাত আসামি হলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়, ছেলে আরিফের সাথে তার দ্ব¦ন্দ্ব ছিল।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হুমায়ুন আহমদ জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্তের শুরুতেই সন্দেহ হয় ছেলেকে। পরবর্তীতে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পায়। এরপর বসুন্দিয়ায় শ্বশুর বাড়ি থেকে আরিফ ও তার স্ত্রীকে আটক করা হয়। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এ হত্যার সাথে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/কেডি