খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২ মে, ২০২৪

Breaking News

  রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ
  হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত
  ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের

দেশে ফিরেছেন সেভেন সামিট জয়ী পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং বিপদসংকুল পর্বতশৃঙ্গ কে-টু জয় করার পর মাতৃভূমিতে ফিরেছেন ওয়াসফিয়া নাজরীন। নেপালের কাঠমান্ডু থেকে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে করে আজ (১৭ আগস্ট) দেশে ফিরেছেন ৩৯ বছর বয়সী এই পর্বতারোহী। ১৯৫৪ সালের পর পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম ও ভয়ঙ্কর পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত কে-টু -তে আরোহণ করা ৪০ নারী পর্বতারোহীর একজন তিনি। ওয়াসফিয়া নাজরীনের এ অভিযানে স্পন্সর ছিল রেনাটা লিমিটেড।
দেশে পৌঁছানোর পর, রাজধানীর শেরাটন ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলনে দুই মাসব্যাপী কারাকোরাম অভিযানের রোমাঞ্চকর যাত্রা নিয়ে কথা বলেন ওয়াসফিয়া। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পর্বতারোহণ এবং ট্রেকিং করার অনুমতি পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসফিয়া বলেন, “বাংলাদেশ যখন ৪০ -এ পা দেয়, তখন আমি সেভেন সামিট জয় করার যাত্রা শুরু করি। দেশের ৫০ বছরে আমি চেয়েছিলাম কে-টু জয় করতে। এ জন্য আমি ১০ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে কে-টু যাত্রার জন্য তৈরি করেছি। ডেথ-জোন (অক্সিজেনের ভয়াবহ স্বল্পতার কারণে যেসব পর্বত আরোহণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ) পর্বতসমূহ আরোহণ করতে অনেক মানুষের প্রয়োজন হয়। আর এ সাফল্যের জন্য আমি আমার দলের প্রতি কৃতজ্ঞ। এবং আমার এ দলে যারা ছিলেন, তাদের বেশ কয়েকজনকে এ মূহূর্তে বিশ্বের সেরা পর্বতারোহী হিসেবে মনে করা হয়। যারা আমার মঙ্গল কামনা করেছে এবং আমার ওপর ভরসা করেছে, সবাইকে ধন্যবাদ। কে-টু আমার আরোহণ করা সবচেয়ে দুর্গম পর্বত, যেখানে বেশ কয়েকবার আমি পাথরে আঘাত পেয়েছি আবার কিছু ক্ষেত্রে ভাগ্যও আমাদের সহায়তা করেছে। কে-টু স্থানীয়ভাবে ‘ছোগোরি’ বা পর্বতের রাজা হিসেবে পরিচিত, প্রতি পদক্ষেপে সেখানে মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে! একবারেই কে-টু জয় করে ফেরত আসতে পেরেছেন এমন অল্পকিছু পর্বতারোহীর মধ্যে আমরা রয়েছি। এমনও অনেক পৃথিবী-বিখ্যাত পর্বতারোহী রয়েছেন যারা বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করেও এ পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে পারেননি। আমি এই অভিযানের স্পন্সর রেনাটা লিমিটেডকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা আমার এই মিশনের ওপর ভরসা রেখেছেন এবং আমাকে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেছেন।”

কারাকোরাম রেঞ্জে অবস্থিত কে-টু পর্বত ৮,৬১১ মিটার উঁচু এবং পর্বতারোহীদের আরোহণের জন্য এভারেস্টের চেয়েও দুর্গম বলে সবার কাছে পরিচিত। বিপদসংকুল পরিবেশ, প্রায় পিরামিড-সদৃশ ঢাল এবং অনিশ্চিত আবহাওয়ার এই ‘স্যাভেজ মাউন্টেন’ -এর চূড়ায় পা রাখতে পেরেছেন মাত্র ৪শ’ পর্বতারোহী, যাদের অনেকেই আর নিচে নামার সুযোগ পাননি। ওয়াসফিয়া নাজরীন গত ২২ জুলাই তার দলের সঙ্গে কে-টু পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করেন। তার দলের অনেকেই পৃথিবী-বিখ্যাত পর্বতারোহী, যাদের মধ্যে মিংমা তেনজি শেরপা, মিংমা ডেভিড শেরপা এবং নির্মল পুরজাকে নিয়ে ‘১৪ পিকস’ নামে একটি ডকুমেন্টারি করেছে নেটফ্লিকক্স। ওয়াসফিয়ার এই ঐতিহাসিক অভিযানের একমাত্র স্পন্সর দেশের স্বনামধন্য ফার্মাসিউটিক্যাল এবং অ্যানিমেল হেলথ প্রোডাক্ট কোম্পানি রেনাটা লিমিটেড।

ওয়াসফিয়া প্রথম বাঙালি এবং একইসাথে প্রথম বাংলাদেশি, যিনি সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেন। তার এই অভিযানের অনেকগুলোতেই স্পন্সর হিসেবে পাশে ছিলো রেনাটা। তিনি পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, পাকিস্তানের উচ্চতম এবং সবচেয়ে দুর্গম ও বিপদসংকুল পর্বতশৃঙ্গ কে-টু বিজয়ী প্রথম বাঙালি এবং বাংলাদেশি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!