নাশকতা, ভাংচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় খুলনা বিএনপির ৩৩ নেতাকর্মীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) খুলনার দু’টি পৃথক আদালত থেকে জামিন পান তারা। এর আগে সকাল থেকে আদালত চত্বরে ভিড় করতে থাকেন ঊভয় অংশের নেতাকর্মীরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২২ নভেম্বর রাতে বিএনপির উভয় অংশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় দু’টি মামলা দায়ের হয়। ২৪ নভেম্বর দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পান। সেখান থেকে খুলনার দু’টি আদালতে নির্দেশপত্র পাঠানো হয়। একটি খুলনা মূখ্য মহানগর হাকিম ও অন্যটি খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে। আজ ছিল উচ্চ আদালতের জামিন মেয়াদের শেষ দিন।
দুপুর ২ টা ২৮ মিনিটের দিকে মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিএনপি উভয় অংশের ৩০ জনকে পর্যায়ক্রমে তিন হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়। অপরদিকে খুলনা মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি ও অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম জামিন পান মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
জামিনপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা আজিজুল হাসান দুলু, মহিলা দলের নেত্রী আজিজা খানম এলিজা, মাসুদ পারভেজ বাবু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহবুব হাসান পিয়ারু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি একরামুল হক হেলাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তুহিন, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, সদস্য সচিব মো: তাজিম বিশ্বাস ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ সুমন।
আসামিদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিষ্টার শফিউল আলম মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান।
অন্য অংশের জামিনপ্রাপ্তরা হলেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, সিরাজুল হক নান্নু, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, চৌধুরী হাসানুর রশীদ মিরাজ, মাসুদ খান বাদল, নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরীফুল ইসলাম বাবু, নাজির উদ্দিন নান্নু, নাজমুল হাসান নাসিম, আবু সাইদ শেখ, মতিয়ার রহমান, মিলন, রবি, সাবেক কাউন্সিলর রোকেয়া ফারুক, নওশাদ, মাসুদুজ্জামান, মুন্না ও মতিয়ার রহমান।
বিএনপির ওই অংশের মামলটি পরিচালনা করেন এড. গোলাম মওলা।
আসামিদের আইনজীবীরা জানান, খুলনায় ২২ নভেম্বর সোমবার বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালনে পুলিশ বাঁধা দিলে ব্যাপক সংঘর্ষ বাঁধে। অনুমতি না থাকার অজুহাতে পুলিশ রাস্তা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সকাল ও বিকেলে কয়েক দফা সংঘাত সৃষ্টি হয়। পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেটে শতাধিক রাজনৈতিক কর্মী আহত হন। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পাঁচ সাংবাদিকও আহত হন। দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিএনপি অফিস চত্বর। ওই রাতে পুলিশ বাদী হয়ে খুলনা থানায় দুটি মামলা দায়ের করে, যার নম্বর-৩৬ ও ৩৭।
খুলনা গেজেট/ এস আই