প্রাণ ও প্রকৃতির ভালোবাসাময় এক অধ্যায় সুন্দরবন দিবস। মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার নিদর্শনে প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে পালিত হয়ে আসছে এই দিবসটি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। এটির রয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমিরও খ্যাতি। প্রাণ ও প্রকৃতির এক লীলাভূমি এই বনে রয়েছে পাঁচ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।
মানুষের অসচেতনতায় প্রতিনিয়তই হুমকির মুখে পড়ছে এমন সব জীববৈচিত্র্য। এভাবে চলতে থাকলে মানবসভ্যতার বেঁচে থাকার রসদও হারিয়ে যাবে একসময়। ব্যক্তি স্বার্থে প্রাণীকূলের বাস্তুসংস্থানের এই শৃঙ্খল ভেঙে ফেলাতে বেশ সিদ্ধহস্ত হয়ে পড়েছি আমরা। সেই সঙ্গে অল্প লাভের আশায় নিজেদের জীবন-জীবিকার দীর্ঘস্থায়ী সম্পদকে অবলীলায় বিসর্জন দিয়ে চলছি।
এই ধ্বংসের মুখোমুখি থেকে নিজেদের ফিরিয়ে আনতে সুন্দরবন দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সবারই প্রাণ আছে। আরো স্মরণ করায় প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে মানবসভ্যতা নয়, বরং প্রকৃতির সান্নিধ্যেই জীবন ফিরে পায় নতুন রূপ।
যেভাবে এলো এই সুন্দরবন দিবস:
সুন্দরবন দিবসকে কার্যকর করে তোলার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন। ২০০১ সালে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলনে পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃত্বে অংশ নেয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর এবং দেশের দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠন। এই সম্মেলন থেকেই জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে এই দিনটিতে পালিত হয়ে আসছে সুন্দরবন দিবস।
খুলনা গেজেট/এনএম