খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবিতে জেলে-বাওয়ালীদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে মঙ্গলবার (১৪ জনু) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের নীলডুমুরস্থ বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে জেলে-বাওয়ালীরা।

সাতক্ষীরা জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মোঃ আজিবর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সুন্দরবন নির্ভর জেলে-বাওয়ালীদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন, জাগো যুব ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ ফারুক হোসেন, যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, জেলে বাওয়ালী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুঞ্জুরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, মোঃ আক্তার হোসেন, আব্দুল হালিম, বিলাল হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধনে জেলে-বাওয়ালীরা বলেন, এই নদী, বনই আমাদের পরিবার। আমরা সুন্দরবনে যেতে না পারলে আমাদের পেটে ভাত হয় না। দয়া করে আমাদের পেটে লাথি মারবেন না।
বক্তারা বলেন, নদীকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা বলে এবং ইলিশ ও কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় তিন মাস জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালীদের সুন্দরবনে প্রবেশের পাশ বন্ধ রাখা হয়েছে। অথচ সুন্দরবন সাতক্ষীরার রেঞ্জের নদীতে ইলিশ মাছ ধরা পড়ে না। তাছাড়া নদীকে বিশ্রাম দেওয়া তো দূরের কথা নিয়মিত কার্গো চলছে।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, যারা পয়সা দিতে পারে রাতের আঁধারে তাদের নৌকাগুলো জঙ্গলে মাছ ধরতে যেতে পারে। আর আমরা যারা ঘুষ দিতে পারি না, তাদের নৌকাগুলো ডাঙ্গায় তুলে রাখতে হয়েছে। মৎস্য প্রজনেন কথা বলে বাংলাদেশে জেলেদের পাশ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাশ দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভারতের জেলেরা সুন্দরবনের আমাদের রেঞ্জের মধ্যে ঢুকে মাছ, মধু, কাকড়া আহরণ করে লাভবান হচ্ছে।

বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, পাশ বন্ধ থাকলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালীকে ৮৬ কেজি করে চাউল দেওয়ার কথা থাকলেও সঠিকভাবে তা দেওয়া হয়নি। সাতক্ষীরায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ২৩ হাজার। অথচ চাউল পেয়েছে মাত্র ১৯৭৯ জন। এছাড়াও অনিবন্ধিত লক্ষাধিক জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালী রয়েছে। তারা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

বক্তারা সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে বন্ধ রেখে রায়মঙ্গল নদীসহ সকল নদী মাছ ধরার জন্য উন্মুক্তকরণ, পাশ পারমিট প্রদানে পূর্বের রেট ফিরিয়ে আনা, সাগরে মাছ ধরার জন্য সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে ফিসিং বোটের লাইসেন্স প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত বনজীবীদের আর্থিক অনুদান প্রদান ও মৎস্য বিভাগ কর্তৃক জেলে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদানের দাবি জানান।

পরে একই দাবিতে জেলে-বাওয়ালীদের পক্ষ থেকে ফরেস্ট অফিসার হারুন অর রশিদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

প্রসঙ্গতঃ গত ১ জুন থেকে বনবিভাগ ইলিশ প্রজনন মৌসুমকে উপলক্ষ করে সুন্দরবনে প্রবেশে ০৩ (তিন) মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে জেলে বাওয়ালীরা সুন্দরবনের নদ-নদীতে মাছ ধরতে না পারার কারণে উপকূলীয় হাজারো জেলে পরিবারে নেমে এসেছে স্থবিরতা। উপার্জনের একমাত্র সম্বল হিসাবে যে সুন্দরবন ছিল, সেটিতে যাওয়া তো দূরের কথা, নদীর পানি পর্যন্ত ছুঁতে পারে না তারা। এমনই পরিস্থিতে সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলে-বাওয়ালীরা।

 

খুলনা গেজেট/ আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!