সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘশুমারির কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুমারি চলছে খুলনা রেঞ্জে। যা চলবে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। পরে ৬ মাস বিরতি দিয়ে ফের শুমারি শুরু হবে শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে শুমারি শেষে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে ফল ঘোষণা করবে বনবিভাগ।
এর আগে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি সুন্দরবনে বাঘ শুমারির কাজ শুরু হয়। সুন্দরবনের কালাবগি ফরেস্ট অফিস এলাকায় ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প পরিচালক আবু নাসের মো. মোহসিন হোসেন জানান, এরইমধ্যে সাতক্ষীরা রেঞ্জে এ শুমারি শেষ হয়েছে। জরিপের জন্য এই রেঞ্জে ২০০টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। কিছুদিন আগে খুলনা রেঞ্জে ১৮০টি ক্যামেরার মাধ্যমে শুমারির কাজ শুরু হয়, যা আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। বৈরী আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে খুলনা রেঞ্জে শুমারি শেষ হওয়ার পর ৬ মাস বন্ধ রাখা হবে। এরপর ১ নভেম্বর থেকে চাঁদপাই রেঞ্জে এবং শেষ পর্যায়ে শরণখোলা রেঞ্জে আবারও শুমারি করা হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে শুমারির কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে সুন্দরবনে তৃতীয়বারের মতো বাঘ শুমারি চলছে। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে মোট ৬৬৫টি গ্রিডে দুটি করে ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে শুমারি করা হচ্ছে। প্রতিটি গ্রিডে ক্যামেরা রাখা হয় ৪০ দিন করে। মাটি থেকে ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে গাছে এসব ক্যামেরা স্থাপনা করা হয়। ১৫ দিন পরপর ক্যামেরার ব্যাটারি ও মেমোরি কার্ড পরিবর্তন কর হয়।
বন বিভাগ সূত্র আরও জানায়, বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ ও সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাঘ শুমারি খাতে ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।
এর আগে ২০১৫ ও ২০১৮ সালে এ শুমারি করা হয়। ২০১৫ সালের আগে পায়ের ছাপ দেখে বাঘ শুমারি করা হতো। ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ১১৪টি, যা ২০১৫ সালে ছিল ১০৬টি।
খুলনা গেজেট/এনএম