সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৪ লাখ টাকা আদায়ের জন্য দেওয়ানী মামলা করেছেন মুনজিতপুরের মোঃ আবু সোয়েব এবেল। সাতক্ষীরা যুগ্ম জজ-১ নং আদালতে দায়ের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদাধিকার বলে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এবং সাধারণ সম্পাদককে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে মোঃ আবু সোয়েব এবেল বাদী হয়ে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের নবগঠিত কমিটি অবৈধ ঘোষণার জন্য একই আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় প্রতিষ্ঠানের পদাধিকার বলে সভাপতি জেলা প্রশাসকসহ ৩৪ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত বিবাদী পক্ষের বিরুদ্ধে ১০ দিনের কারণ দর্শনোর নোটিশ দিয়েছেন।
বাদী মোঃ আবু সোয়েব এবেলের দাবী তিনি সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগতভাবে ও আর্থিকভাবে নানাবিধ সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে মিশনে সুপেয় পানির জন্য ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করেছেন। বিভিন্ন সময়ে লক্ষাধিক টাকা অনুদান দিয়েছেন। এছাড়া ২০ হাজার ১০ টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্য হয়েছেন।
মোঃ আবু সোয়েব এবেল জানান, তিনি সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের নিজস্ব জায়গায় অবস্থিত সাবেক ফেন্সি ক্লথ স্টোরটি ভাড়া নেন। এজন্য বিবাদীদের নির্দেশে ওই দোকানের পূর্বের ভাড়াটিয়া মীর মাহামুদ আলী লাকীকে ২০ লাখ টাকা এবং মিশনকে ১ লাখ টাকা ডোনেশন প্রদান করেন। এছাড়া মাসিক ৫ হাজার টাকা ভাড়ায় ১ জুলাই ২০১৭ তারিখে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন।
আবু সোয়েব এবেল আরো জানান, চুক্তি অনুযায়ী তিনি দোকানটি নুতন করে নির্মাণ করতে গেলে ১ ও ২ নং বিবাদী পৃথকভাবে শুধুমাত্র ওই দোকান ঘরটি নির্মাণ করতে দেননি। তারা সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশন মাল্টি কমপ্লেক্স নামে একটি কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। নির্মাণ কাজের জন্য আবু সোয়েব এবেল মালামাল ও অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান করবেন এবং মিশন ওই ঋণ পরিশোধ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আবু সোয়েব এবেল সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনে মাল্টি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য স্থানীয় রহমান ট্রেডার্স, আনোয়ার ট্রেডিং, আল্লাহর দান আয়রন স্টোর নামক রড সিমেন্টের দোকান ও একে ব্রিক্স ইট ভাটা হতে ৬০ লাখ টাকার রড, সিমেন্ট ও ইট নিজ দায়িত্বে বাকীতে ক্রয় করে সরবরাহ করেন।
এছাড়া আবু সোয়েব এবেল সাতক্ষীরা ডাচ বাংলা ব্যাংক হতে নিজ নামে ৬০ লাখ টাকা ও স্ত্রীর নামে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেন এবং নিজের ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণ বিক্রয় করে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা সর্বমোট ৯০ লাখ ৫০হাজার টাকা সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনকে নগদে প্রদান করেন। সর্বসাকুল্যে এবেলের পাওনা হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৩০৪ টাকা।
পরবর্তীতে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন বিভিন্ন কিস্তিতে আবু সোয়েব এবেলকে টাকা প্রদানের পর তার আরো ৮৩ লাখ ৮৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওনা আছে। কিন্তু বিবাদী পক্ষ অদ্যাবধি উক্ত টাকা পরিশোধ করেন নাই। উক্ত টাকা আদায়ের মামলায় আদালত দুইজন বিবাদীকে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে পৃথক আর একটি মামলায় গত ৫ মে তারিখে গঠিত সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের কার্যনির্বাহী কমিটি অবৈধ ঘোষণার আবেদন জানিয়েছেন। আদালত এই মামলার ৩৪ জন বিবাদীকে ১০ দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের আদেশ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম