খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের চলাচলের ভরসা এখন ভেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সেপ্টম্বরের মাঝামাঝ সময়ে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা শহর ও সদর উপজেলার নিন্মাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণা করেছে। পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় জলাবদ্ধ এলাকার মানুষজন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

কেবল রৌদ্রে শুকালেই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে এই আশায় জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। এমন পরিস্থিতিতে জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে ককসিট, ড্রাম বা প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি ‘ভেলা’। বিভিন্ন উপকরণ বস্তায় ভরে সেলাই করে তৈরি করা ভেলার উপরে হালকা কাঠের পাটাতন দিয়ে বসা বা দাঁড়ানোর উপযোগী করে পানিতে চলাচলে ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, ফিংড়ি, লাবসাসহ আশপাশের জলাবদ্ধ এলাকায় মানুষের ভেলা এখন একমাত্র বাহন। এদিকে দ্রুততম সময়ে পানি নিষ্কাশনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।

ধুলিহর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের নজরুল সানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা পানিবন্দি হয়ে আছি। আমি মাছের ব্যবসা করি। আমাকে দিনে ৩/৪ বার বাজারে যেতে হয়। বার বার ভেজা সম্ভব না। তাই প্লাস্টিকের ভেলা তৈরি করে নিয়েছি।

একই এলাকার শাহিনুর নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের এলাকায় বন্যার কারণে পানি দূষিত হয়ে গেছে। খাবার পানির খুব সংকট। ভেলায় করে তিন থেকে চার কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি আনা হয়।

গোবিন্দপুর গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, এখনও পোল্ট্রির খামারটি জেগে আছে। মুরগির জন্য প্রতিদিন খাবার আনতে হয়। ভ্যান কিংবা ইজিবাইক এলাকায় ঢোকে না। তাই ভেলায় করে করে ২৫ কেজি ওজনের চার বস্তা পোল্ট্রি ফিড কিনে আনলাম।

আশিকুর রহমান আশিক নামে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্র জানায়, স্কুল ও প্রাইভেট পড়তে যেতে প্রতিদিন দুইটা ড্রেস ভিজে নষ্ট হতো। তাই আমার আব্বু চলাচলের জন্য ভেলা তৈরি করে দিয়েছে। ভেলায় করে আমি বাড়ি থেকে রাস্তায় গিয়ে উঠি।

বালুইগাছা গ্রামের হাফিজুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতায় পানি দূষিত হয়ে যাওয়ায় হাত-পা চুলকায়। তাই আমি ভেলায় করে প্রয়োজনীয় কাজ মেটাই।

তিনি জানান, নৌকা কেনা সম্ভব না। এজন্য এলকার প্রায় সবাই চলাচলের জন্য ভেলা ব্যবহার করছেন।

প্রসঙ্গত, অপরিকল্পিত নদী খনন ও অপরিকল্পিত মৎস্য ঘেরের কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!