খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩ মে, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, স্টেশন মস্টারসহ সাময়িক বরখাস্ত ৩
  এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়

শেষ দি‌নে বাংলা‌দে‌শের চাই ৭ উইকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পঞ্চম দিনে পৌঁছেছে চট্টগ্রাম টেস্ট। ম্যাচের শেষ দিনের সমীকরণ—জিততে বাংলাদেশের লাগবে সাত উইকেট, আর ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন ২৮৫ রান। এমন রোমাঞ্চ জমিয়ে রেখে আজ রোববার খেলা শুরু হচ্ছে।

এর আগে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গতকাল শনিবার চতুর্থ দিনের শেষ সেশনের সুযোগ মোটামুটি কাজে লাগিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন টপ অর্ডারকে হারালেও ১১০ রান নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের দিন শেষ করে সফরকারীরা। আজ শেষ দিনে জয়ের জন্য ক্যারিবীয়দের চাই ২৮৫ রান, নয়তো হার এড়াতে টিতে থাকতে হবে পুরোদিন। অন্যদিকে এই টেস্টে জিততে আজ সাত উইকেট নিতে হবে বাংলাদেশকে।

এ ছাড়া দলকে জয় উপহার দেওয়ার পাশাপাশি একটি দারুণ ব্যক্তিগত অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে মিরাজ। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। বল হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিয়েছেন সাত উইকেট। আর তিনটি উইকেট নিতে পারলে পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচে একশর বেশি রান এবং ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়বেন মিরাজ।

চতুর্থ ইনিংসে গতকাল শনিবার ৩৯.৫ ওভার ব্যাট করে ১১০ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে উইকেটে ছিলেন কাইল মায়ার্স (৩৭) ও বোনার (১৫)।

বাংলাদেশের দেওয়া ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু উইন্ডিজকে বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। স্পিনঘূর্ণিতে দুই ক্যারিবীয় ওপেনারকে তুলে নেন এই অফ স্পিনার। প্রথমে ক্যাম্পবেলকে (২৩) এলবির ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন মিরাজ। এরপর আউট করেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে (২০)। একইভাবে এলবি করে ফেরান মোজলেকে। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে দুই ব্যাটসম্যান মায়ার্স ও বোনারের ব্যাটে চড়ে দিনের শেষ সময় পার করে ক্যারিবীয়রা।

এদিকে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেকে মেলে ধরেন বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। সাগরিকায় নিজের সপ্তম সেঞ্চুরি এবং ক্যারিয়ারের দশম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আট উইকেটে ২২৩ রান করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের লিডসহ ক্যারিবীয়দের সামনে ৩৯৫ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় মুমিনুল হকের দল। এই লক্ষ্য টপকাতে হলে রেকর্ড গড়তে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কারণ, চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে এত রান তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দল। সাগরিকায় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নিউজিল্যান্ডের দখলে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ৩১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৩ উইকেটে জিতেছিল তারা। এবার জিততে হলে সেই রেকর্ড ভাঙতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। শতকের ঘরে যেতে মুমিনুল খেলেন ৯টি বাউন্ডারি। অবশ্য সেঞ্চুরির পর বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। ১১৫ রান করে আউট হন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তাঁর সঙ্গে ১১২ বলে ৬৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। শেষের দিকে মিরাজ করেন সাত রান ও তাইজুল করেন তিন রান।

বড় লিড নিয়েই গতকাল চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। এর আগে তিন উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। উইকেটে ছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ দিন সকালে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুজন। তবে দলীয় ৭৪ রানের মাথায় কর্নওয়ালের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন মুশফিক। ৪৭ বলে ১৮ রান করেন তিনি।

এর আগে ম্যাচের তৃতীয় দিন গত শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানেরা। একে একে ব্যর্থ হয়েছেন তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম। তবু প্রথম ইনিংসে বড় লিড পাওয়ায় স্বস্তি নিয়ে টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ করে মুমিনুল হকের দল।

চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হয়েছেন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর আশা জাগিয়ে ফেরেন সাদমান ইসলাম। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে তৃতীয় দিনের শেষভাগ ভালোভাবে পার করেন মুমিনুল ও মুশফিক।

তৃতীয় দিনের শুরুর দিকে দুটি উইকেটই নেন রাকিম কর্নওয়াল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চার নম্বর বলে প্রথমে এলবির ফাঁদে ফেলেন তামিমকে। এরপর সাজঘরে ফেরান শান্তকে। ১৫.১ ওভারে সাদমানকে আউট করেন গ্যাব্রিয়েল। ৪৩ বলে পাঁচ রান করেন তরুণ এই ওপেনার।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৯৬.১ ওভারে ১০ উইকেটে ২৫৯ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ১৭১ রানের বড় লিড পায় বাংলাদেশ।

দুই উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে গত শুক্রবার তৃতীয় দিন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিনের প্রথম সেশনেই তিন উইকেট হারায় তারা। প্রথম সেশনে তিন উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান জশুয়া ডি সিলভা ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড। দুজন মিলে ২৫৫ বল খেলে ৯৯ রানের জুটি গড়েন। অবশেষে থিতু হওয়া এই জুটিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান দুই স্পিনার—মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান। তৃতীয় দিনের আটটি উইকেটই পেয়েছেন স্পিনাররা। এর মধ্যে মিরাজ চারটি পেয়েছেন। সমান দুটি করে পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। আগের দিন দুটি উইকেট পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। এ ছাড়া ৬৮ রান আসে ব্ল্যাকউডের ব্যাট থেকে। ৪২ রান করেন ডি সিলভা। আর ৪০ রান আসে কাইল মেয়ার্সের ব্যাট থেকে।

ম্যাচ শুরুর দিন গত বৃহস্পতিবার মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ।

খুলনা গেজেট/কেএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!