খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  গাজা নীতির বিরোধিতা করে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের পদত্যাগ
নাটোর বিস্ফোরণ

শেষ ছোঁয়া হলো না প্রিয় স্ত্রী-সন্তানের দেহ

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হারিয়েছেন অলি বকস। দগ্ধ হয়েছেন অলি নিজেও। বুধবার (৮ মার্চ) নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তবে ঝলসে যাওয়া সন্তান ও স্ত্রীর শেষ গোসলও করাতে পারলেন না অলি। কারণ বিস্ফোরণে তাদের দেহ পুরোপুরি ঝলসে গেছে।

দুই হাত ও দেহের বাঁ অংশে পোড়া ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বেড থেকে ছুটে এসেছিলেন অলি। চেয়েছিলেন সন্তান ও স্ত্রীকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে। তবে তা হলো না। কাফনে মোড়ানো ১০ বছরের কন্যা অনিয়া আক্তার, ৪ বছরের অমর বকস এবং স্ত্রী সোমা আক্তারকে (৩০) একসঙ্গে কবরে শোয়ানোর দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অলি। হৃদয়বিদারক এ দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় এলাকাবাসীও।

উপজেলার খাকসা উত্তরপাড়া গ্রামে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে তাদের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে অলি বকস (৩৫) ও প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেনও (৩৫) দগ্ধ হন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে আনোয়ারকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে বুধবার ভোরে কাউকে না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসেন অলি। বাসে চড়ে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফেরেন শূন্য ভিটায়। সকাল ৮টার দিকে অলি নিজ ভিটায় আসার পর তার কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। সকাল ৯টার দিকে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোমিন আলী বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপে ছিদ্র ছিল। বিষয়টি জানতেন না গৃহবধূ সোমা। রান্নার জন্য আগুন জ্বালালে বিকট বিস্ফোরণে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। শবেবরাতের রাত হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন। ফলে আগুন লাগলেও তাৎক্ষণিক তা নেভানোর জন্য কেউ এগিয়ে আসতে পারেননি। অগ্নিকাণ্ডে তাদের তিনটি ঘরসহ সব পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে নাটোর ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’

তিনি আরও বলেন, ’খবর পেয়ে রাতেই জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়াম খাতুন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক ঘটনাস্থলে আসেন এবং সকল বিষয়ে খোঁজখবর নেন। নিহতদের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসক নগদ ২০ হাজার টাকা স্বজনদের হাতে তুলে দেন। এ ছাড়া ঘর তৈরিসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন তিনি।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!