খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৬ মে, ২০২৪

Breaking News

  ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ স্বতন্ত্র সব পরিচালকের পদত্যাগ
  মিল্টন সমাদ্দারের প্রতারণায় সহযোগী ছিলেন তার স্ত্রী : ডিবি প্রধান
  জনগণের ভরসাস্থল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেনাবাহিনী : প্রধানমন্ত্রী

‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা’ বিল সংসদে পাস

গেজেট ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে খুলনায় একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আইনে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় সংসদ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সোমবার ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিল-২০২১’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

গত ১৯ জানুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলে দেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হবে পাঁচটি।

এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে খুলনা অঞ্চলের মধ্যে যত মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট বা অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত যেসব ইনস্টিটিউট আছে সবই খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসবে। অন্যান্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন এই আইন করা হচ্ছে। বিলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, এখতিয়ার এবং ক্ষমতার বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে চিকিৎসা শাস্ত্রে মানোন্নয়নে উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা, আধুনিক জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সময়ের প্রয়োজনে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কিরা অতি প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।’

বিলে পরিদর্শন ও আর্থিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভূমিকার উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, ক্ষমতা ও দায়িত্বও বর্ণনা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, অনুষদ, বিভাগ, প্রয়োজনীয় কমিটি ও শৃঙ্খলা বোর্ড গঠন এবং এদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে খসড়া আইনে। রাষ্ট্রপতি হবেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।

বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো উত্থাপনের সময় বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যখাতের সমালোচনা করেন।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ‘নাম ও কামের মিল থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নামে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে, সেটি কোন গ্রেডেই নেই। দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ করা হয়ে। যে উদ্দেশ্য-লক্ষ্য নিয়ে স্থাপন করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাতে এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেন এবং প্রধানমন্ত্রী যথাযথ নির্দেশনা দেন তবে এটি কাজ করবে।’

হারুন বলেন, ‘মন্ত্রী ১১২টি মেডিকেল কলেজের তথ্য দিলেন। কিন্তু এর কোয়ালিটি কী? সংখ্যা দিয়ে কী করব, যদি মান না থাকে? করোনার ভ্যাকসিন কত দামে কিনলাম? বাণিজ্য হচ্ছে কী না জানা দরকার। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তাররা ঠিক মত কাজ করছে কিনা? ডিউটির সময় অন্য জায়গায় প্র্যাকটিস করে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসে হাসপাতালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো হয়ে গেছে।’

বিএনপির সংরিক্ষত আসনের রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হয়ত কমবে। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, চরম দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা সেগুলো কী কমবে? ব্যক্তিখাতে চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশে বাড়ছে।’

জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণায় বেশি আত্মনিয়োগ করা উচিত। গবেষণার জন্য বরাদ্দ বেশি দেওয়া উচিত। বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিশেষায়িত সেবার ক্ষেত্রে মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। দুর্নীতি কমানো দরকার। মন্ত্রণারয়ের কাজে স্বচ্ছতা দরকার।’

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি সংবাদে আসছে। কারা করছে? এই দুঃসাহস কীভাবে পায়? যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সব দোষ আসে মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমলাদের কিছু হয় না। তারা এত শক্তিশালী! অথচ দুর্নীতি হয় প্রকল্প পরিচালক লেভেলে। আজ পর্যন্ত একজন সচিব বা প্রকল্প পরিচালকের কিছু হয়নি।’

এসব কথার জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যখাতের অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারের উদ্যোগের বিস্তারিত তিনি তুলে ধরেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসা সুরক্ষা আইন খুব তাড়াতাড়ি সংসদে আনবো। অনেকে বলে করোনায় অব্যবস্থা। ব্যবস্থাইতো ছিল। কেউ কিছুই জানতো না। যখন জানা গেল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। করোনাকালে রোগীর পেছনে প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকা খরচ করেছে। যারা আইসিইউতে ছিল, ৫০ হাজার টাকা প্রতিদিন খরচ করেছে। আমরা কাউকে ছাড় দিইনি। সবচয়ে কম দামে ভ্যাকসিন পেয়েছি। চুক্তিতে আছে ভারত যে দামে নেবে আমাদেরও সেই দামে দেবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। সেইভাবে টিকা পেয়েছি।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!