খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯০
  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

শুল্ক ছাড়ের সুফল নেই খুলনার চিনির বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিনি আমদানিতে সরকার শুল্ক ছাড় দিলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। বাড়তি দরেই চিনি কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিলেও পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহে উল্টো দাম বেড়েছে প্রতি মণে ২০ থেকে ৫০ টাকা। আমদানিকারকরা বলছেন, শুল্ক কমানোর আগে যে চিনি আমদানি করা হয়েছে, সেগুলো এখনও বিক্রি শেষ হয়নি। শুল্ক ছাড়ের পর এলসি খুলে চিনি আমদানি করলে সেগুলো বাজারে আসতে দুই মাস লাগতে পারে।

গত সেপ্টেম্বরে সরকার চিনির দর বেঁধে দেয়। গত ছয় মাসে মোট চারবার দাম বাড়ানোর পরও চিনির বাজারে অস্থিরতা কাটেনি। এ পরিস্থিতিতে আমদানিকারকরা শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানান সরকারকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে তিন হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনিতে ছয় হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমদানিকারকরা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত শুল্ক ছাড়ের এই সুবিধা পাবেন।

আমদানিকারক ও বাজারজাতকারীদের তথ্যমতে, শুল্ক ছাড়ের এই সুবিধার আওতায় চিনি আমদানি হলে কেজিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমার কথা ছিলো। কিন্তু বাজারে দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

খুলনা নগরীর বিভিন্ন বাজার ও খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১১২ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাল চিনি (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়।

নগরীর শেখপাড়া বাজারের খুচরা বিক্রেতারা সিরাজুল ইসলাম ‘শুল্ক কমানোর কোনো খবরই বলেনি কোম্পানিগুলো। চিনির দাম কমেনি, উল্টো বাড়ছে। শনিবার প্রতি বস্তায় পাইকারিতে আরও ২০ টাকা বেশি দিয়ে চিনি কিনেছি।’ এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে ৫০ টাকার মতো দাম বেড়েছে।

মিস্ত্রীপাড়া বাজারের রহমান স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. আল-আমিন বলেন, ‘চিনির সংকট কিছুটা কেটে গেছে। প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ কম। খোলা চিনি আছে। দাম আগের মতোই। তবে দাম বাড়ানোর কয়েক দিন আগে কোম্পানির ডিলাররা কিছুটা ইঙ্গিত দিয়ে যান আমাদের। কিন্তু শুল্ক ছাড়ের কারণে দাম কমবে কিনা এমন কোনো তথ্য তাঁরা দেননি। আপাতত দাম কমার কোনো লক্ষণও দেখি না।’

চিনির দাম না কমার জন্য পাইকারি ব্যবসায়ীরা দায়ী করলেন আমদানিকারক বা মিলারদের।  পাইকারি চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আবুল হাশেম বলেন, ‘সরকার শুল্ক কমিয়েছে। কিন্তু মিলগেটে দাম কমেনি। মিলাররা জানিয়েছেন, চিনির আমদানির ব্যয় বেড়েছে। সরকার শুল্ক কমানোর কারণে এখন দাম বাড়েনি। নতুবা বাজারে দাম আরেক দফা বাড়ত।’ তিনি বলেন, যেহেতু আগে কেনা চিনির দাম বেশি পড়েছিল, তাই শুল্ক কমানোর কারণে হয়তো ব্যয়টা সমন্বয় করছেন তাঁরা। তবে শুল্ক ছাড়ের আওতায় চিনি এলে অবশ্যই দাম কমানো উচিত।

চিনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজেআই) সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আগের আমদানি করা চিনি শুল্ক ছাড়ের আগেই খালাস করা হয়েছে। সেগুলোতে বেশি শুল্ক পরিশোধ করতে হয়েছে। কোম্পানিগুলোর গুদামে থাকা সেই চিনি বর্তমান দরেই বিক্রি করতে হচ্ছে। শুল্ক ছাড়ের ঘোষণার পর থেকে যে চিনিগুলো বন্দর থেকে খালাস করা হবে, সেগুলোতে নতুন দাম নির্ধারণ হতে পারে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!