প্রকৃতি থেকে আপাতত বিদায় নিল গরম। উত্তরের হিমেল বাতাস দিচ্ছে শীতের বার্তা দিচ্ছে। দুপুরের পর থেকে কমতে থাকে তাপমাত্রা। সন্ধ্যার পর থেকে গরম কাপড় ছাড়া বাইরে চলাচল কঠিন। বাসার ভেতরও গায়ে দিতে হয় কাথা-কম্বল। খুলনার ফুটপথগুলোতে জমতে শুরু করেছে শীতের কাপড় বিক্রি। সুযোগ বুঝে গরম পোষাক কিনে আগাম প্রস্ততি নিচ্ছেন ক্রেতারা। খুলনা জেলা স্টেডিয়াম, ডাকবাংলা মোড় ও জব্বার মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্রেতারা ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে হুডি, মোটা গেঞ্জি, জ্যাকেট, সুয়েটার, মেয়েদের কার্ডিগান, শর্ট কোর্ট, বেলবেড জ্যাকেট, চাদর, কম্বল, কম্পোর্টার, বাচ্চাদের শীতের জামা, কানটুপি, মোজাসহ বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাতে। দুপুর থেকে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে শীতের পোষাকের বেচাকেনা। নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন এসব দোকানে শীতের পোষাক কিনতে।
ডাকবাংলা মোড়ের ভ্রাম্যমান বিক্রেতা শাহীন শিকদার খুলনা গেজেটকে বলেন, নভেম্বরের মাঝামঝি সময় থেকে শীতের কাপড় বিক্রি শুরু করেছি। গেলবারের তুলনায় এবারের বিক্রির পরিমান একটু বেশি। তিনি বলেন, শীতের পোষাকের দাম এবার একটু বেশী। কারণ হিসেবে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তেমন ভাল না। নির্বাচিত সরকার এলে সবকিছুর দাম স্থিতিশীল হবে। তবে তিনি আরও বলেন, শীতের তীব্রতা এখনও বাড়েনি। বাড়লে বিকিকিনি বাড়বে।
খুলনা জেলা স্টেডিয়াম এলাকার বিক্রেতা মো: রফিক বলেন, গেল সপ্তাহে দোকানে শীতের পোষাক তুলেছি। গরম কাপড় টুকটাকা বেচা শুরু হলেও পুরোপুরি জমেনি। তীব্রতা বাড়লে বিক্রিও বাড়বে।
ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানের শীতবস্ত্রের দাম যাচাই করে দেখা যায়, হুডি ২০০-৪৫০ টাকা, মোটা গেঞ্জি ১৫০-২৫০ টাকা, সুয়েটার ২০০-৩০০ টাকা, মোটা জ্যাকেট ৫০০-৭০০ টাকা, চাদর ২৫০-৮০০ টাকা, ডেনিম শার্ট ২০০-৩০০ টাকা, কম্বল ২০০-৫০০ টাকা, কানটুপি ৬০-২০০ টাকা, মাঙ্কি টুপি ৬০ টাকা, জ্যাকেট ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মোজা ৫০-১০০ টাকা, মাফলার ১৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জব্বার বিপনী বিতানের ব্যবসায়ী সোহেল এন্ড ব্রাদার্সের মালিক মো: সোহেল বলেন, বেলের দাম বেশি। বেলের মানের ওপর গরম কাপড়ের দাম নির্ধারণ করে। তিনি বলেন, ডলারের দাম বেশি তাই এক একটি বেল ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। তিনি দোকানে প্যারাসুট কাপড় ও লেদারের জ্যাকেট তুলেছেন। দাম বেশি থাকায় অনেকে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। তিনি জ্যাকেট মানভেদে ৫০০-১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
ক্রেতা জামিল হাওলাদার খুলনা গেজেটকে বলেন, নতুন থেকে পুরানো কাপড়ের দাম বেশি। অনেক ঘুরাঘুরি করে একটা কাপড় কিনেছেন তিনি। তবে গতবারের তুলনায় এবার দাম বেশি। শীতের তীব্রতা বাড়লে কাপড়ের দাম বেড়ে যাবে। তাই আগেভাগে যেটি পেলাম সেটি কিনে নিলাম।
মো: সাদী বলেন, খুলনার মানুষ গরম কাপড় কিনতে প্রতিবেশী দেশ ভারত যেত। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। বৈধভাবে সেখানে অনেকে প্রবেশ করতে পারছেন না। তাই এবার শীতের পোষাক কেনার জন্য মানুষ দেশের মার্কেটগুলোতে ভিড় করবেন। তাদের চাহিদার কারণে পোষাকের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলে তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
খুলনা গেজেট/এমএম