খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  কাল থেকে দেশের সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়
  সুন্দরবনের গহিনে জ্বলছে আগুন
  দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৬১ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি
  মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত

শিক্ষার প্রসার ও পরিবেশ উন্নয়নে যুব সমাজের অনুপ্রেরণা দিবাশিষ রায় অলোক!

তালা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শাহাজাতপুর গ্রামের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল পুন্ডুলিক পাড়া। এই অঞ্চলটি শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত। এই অঞ্চলের শিক্ষা, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছেন এখানকার আলো বাতাসে বেঁড়ে উঠা দেবাশীষ রায় অলোক। শিক্ষার প্রসারের জন্য গড়ে তুলেছেন শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “বিদ্যা বিকাশ কেন্দ্র”। প্রতিনিয়ত পরিস্কার ও সংস্কার করে চলেছেন এলাকার রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সে সাহাজাতপুর গ্রামের নীলমণি রায়ের ছেলে।

রবিবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, পুন্ডুলিক পাড়ার প্রায় ২ কিলোমিটার গ্রাম্য রাস্তা নিজ হাতে পরিস্কার করছেন। নিজ উদ্দ্যোগে সে সকল রাস্তা চলাচলের উপযোগী করতে বাঁলু ও মাটি দিয়ে সংস্কার করছেন। এলাকার প্রতিটি মন্দির প্রাঙ্গনও খুবই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন।

এলাকার সাধারণ মানুষ কে সাথে নিয়ে দরিদ্র ও অসহায় ছেলে মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে বিনা বেতনে পাঠদান করে চলেছেন তিনি। শুরুতেই উপযুক্ত জায়গা না থাকায় গাছতলায় পাঠদান শুরু করেন তিনি। লেখাপড়া ছাড়াও অভিনয়, গান, আবৃত্তি ও উপস্থাপনা ছবি আঁকা শেখানোর মাধ্যমে শিশুদের সাথে তার গড়ে উঠেছে গভীর সম্পর্ক।

কাজের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করলেও মন টেকেনি তার। তাই এলাকার ছেলে মেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ফিরে এসে ২০২০ সালে গ্রামে গড়ে তোলেন শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “বিদ্যা বিকাশ কেন্দ্র”। স্বীয় ধর্মের মানুষের পূজা অর্শ্চনার জন্য গড়ে তোলেন সার্বজনীন শিব-দূর্গা-রাম মন্দির।

জানতে চাইলে দেবাশীষ রায় অলোক বলেন, একসময় আমাদের এপাড়া খুবই অবহেলিত ছিল। এ অঞ্চলের বাচ্চারা লেখাপড়ায় অনেক পিছিয়ে। আমি শহরে শিক্ষকতা করেছি। এলাকায় ফিরে ছেলেমেয়ের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে এই অঞ্চলের বাচ্চাদের এগিয়ে নিতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। সে কারণে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে এলাকার জনগণকে সাথে নিয়ে গড়ে তুলেছি বিদ্যা বিকাশ কেন্দ্র। শিক্ষার প্রসারের জন্য নিজ অর্থায়নে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি। তাদের সাথে নিয়ে ঝরেপড়া শিশুদের শিক্ষা দিয়ে চলেছি। এলাকার শিক্ষিতের হার শতভাগ করার লক্ষে কাজ করে চলেছি। তবে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ঠিকভাবে কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যদি কোনো স্বহৃদয় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারী ভাবে সহযোগীতা পেলে আরও ভলোভাবে প্রতিষ্ঠানটি চালাতে পারব বলে জানান তিনি।

খেশরার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম লিয়াকত হোসেন বলেন, নানামুখী প্রতিভার অধিকারী এই অলোক। দক্ষিণ শাহজাদপুর গ্রামের পুন্ডুলিক পাড়ার ছেলেমেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলেছেন এবং রাস্তাঘাট গুলো নিজহাতে পরিষ্কার পরিছন্নতা, বয়স্কদেরও শিক্ষার ব্যবস্থা করে চলেছেন তিনি। এমন আলোকিত মানুষ প্রতিটি গ্রামে থাকলে সমাজ ও পরিবেশ সুন্দর হতো।

বিদ্যা বিকাশ কেন্দ্রের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএম ফজলুল হক বলেন, আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যা বিকাশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে চলেছে ছোট ভাই অলক। এটি আসলেই মহৎ কাজ। এই প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখার জন্য সকলে মিলে চেষ্টা করছি। এ প্রতিষ্ঠান কোন সরকারি বেসরকারি বরাদ্দ এখনো পর্যন্ত পায়নি। আমাদের প্রত্যাশা সরকারি, বেসরকারি অথবা সমাজের বিত্তবানরা এই মহৎ কাজে সহযোগীতায় এগিয়ে আসুক।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!