খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র অচলাবস্থা চলছে টানা চার মাস ধরে। একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে যাবতীয় আর্থিক কার্যক্রম। উপাচার্যের স্বাক্ষরের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ ‘শ শিক্ষক কর্মকর্তা- কর্মচারীর মে মাসের বেতনসহ পবিত্র ঈদুল আযহার উৎসব ভাতা পায়নি কেউ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের বিলও বন্ধ রয়েছে।
উপাচার্যের অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি অর্থবছরে রাজস্ব খাতে বরাদ্দকৃত অব্যায়িত অর্থ খরচ করা সম্ভব হচ্ছ না। ৩০ জুনের মধ্যে এ অর্থ খরচ করতে না পারলে আর্থিক জটিলতা তৈরির আশংকা রয়েছে।
সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রেজিস্টার প্রকৌশলী মোঃ আনিচুর রহমান ভূঁইয়া ২৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনার আবেদন জানিয়ে চ্যান্সেলর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব চিঠি দেন। তবুও সংকটের কোন সুরাহা হয়নি।
এর আগে গত ২৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ও অতি দ্রুত শিক্ষা সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকবৃন্দ (ডীন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক, প্রভোস্ট, অন্যান্য পরিচালকগণ ও চেয়ারম্যানবৃন্দ) ‘র পক্ষে সায়েন্স এন্ড হিউম্যানিটিস অনুষদের ডীন প্রফেসর ড.আবুল কালাম আজাদ শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও কোন সাড়া দেননি শিক্ষা উপদেষ্টা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ আর্থিক কার্যক্রম চালু করার বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স এন্ড হিউম্যানিটিস অনুষদের ডীন প্রফেসর ড.আবুল কালাম আজাদের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী মোঃ আনিছুর রহমান ভূঁইয়া আজ সকালে এক সভা আহবান করেছেন। প্রশাসনিক ভবনের সকাল সাড়ে ১০ টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইন্স এন্ড হিউম্যানিটিস বিভাগের ডীন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের আভ্যন্তরীণ সদস্য, সকল ডীন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, রেজিস্টার, কন্ট্রোলার, প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক (ইআইএএ) কে উক্ত সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
জানা যায়, ওই সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে আপাতত একজন কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের অনুরোধের রেজুলেশন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষকদের অনাস্থা ও আন্দোলনের মুখে ১৯ মে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হযরত আলী দাপ্তরিক কাজের কথা বলে ঢাকার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এর দুইদিন পর ২২ মে রেজিস্টারের মোবাইল ফোনে মেসেজ দিয়ে তিনি পদত্যাগের কথা জানান। সেই থেকে টানা প্রায় দুই মাস অভিভাবকহীন কুয়েট।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৫ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ- উপাচার্য প্রফেসর ড. শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
খুলনা গেজেট/এইচ