খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

লোহাগড়া থানা হানাদার মুক্ত দিবস

লোহাগড়া প্রতিনিধি

৮ ডিসেম্বর লোহাগড়া থানা হানাদার মুক্ত দিবস।একাত্তরের নভেম্বর মাসের শুরুতেই নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাকিস্থান হানাদার মুক্ত হয়েছিল। তবে লোহাগড়া মুক্তির স্বাদ পায় ৮ ডিসেম্বর। সেদিন লোহাগড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধারা লোহাগড়া থানায় গেরিলা আক্রমণ চালায়। পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে উড়িয়ে দেয় লাল সবুজের পতাকা। এরপরই স্বর্তঃস্ফুর্ত বিজয় উল্লাসে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মুক্তিপাগল জনতা। জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে পড়ে লোহাগড়ার রাস্তাঘাট।

নভেম্বরের শুরুতে লোহাগড়ার বিভিন্ন স্থান থেকে পরাজয়ের পর স্থানীয় রাজাকাররা থানায় আশ্রয় নেয়। সেখানে পুলিশ ও রাজাকাররা মিলে অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিশাল মজুদ গড়ে তোলে। এ কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক ভেবেচিন্তে থানায় আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

মধ্য নভেম্বরের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা লোহাগড়া থানা আক্রমণের চুড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহন করে। এ জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খসরুজ্জামানের উপস্থিতিতে ২ ডিসেম্বর নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বাবু মীরের বাড়িতে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গ্রুপ কমান্ডার ইমান আলী, ওয়ালিয়ুর রহমান, নূর মিয়াসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন গেরিলা যোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মাকড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির হোসেনের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধার দল আরেক গোপন বৈঠকে লোহাগড়া থানা আক্রমণের চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ৮ই ডিসেম্বর ফজরের আযানের সঙ্গে সঙ্গে মুজিব বাহিনীর প্রধান শরীফ খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা লোহাগড়া থানা আক্রমণ করেন। চার ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধ শেষে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়।যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর গুলিতে লোহাগড়ার কোলা গ্রামের সরদার হাবিবুর রহমান ও যশোর সদর উপজেলার জঙ্গল বাঁধাল গ্রামের মোস্তফা কামাল শহীদ হন। পরে শহীদ হাবিবুর রহমানকে লোহাগড়া থানায় এবং শহীদ মোস্তফা কামালকে ইতনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে দাফন করা হয়। লোহাগড়া থানা আক্রমনের সময় মুক্তিযোদ্ধারা ২২ জন পুলিশ ও স্থানীয় রাজাকারকে আটক করে। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা হানাদার মুক্ত হলেও উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ স্বরণে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভের শেষ নেই।

এদিকে লোহাগড়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বৃহস্পতিবার (৮ই ডিসেম্বর) দিনব্যাপি নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পতাকা উত্তোলন, র‌্যালী, কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা।

খুলনা গেজেট/ বিএমএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!