খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  ৫ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক

রমজানে স্কুলে উপস্থিতি কম, অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

তানভীর আহমেদ ও আয়শা আক্তার জ্যোতি

পবিত্র রমজানে খুলনার বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। যে সব শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসছে প্রথম ২/৩টি ক্লাসের পর তারাও আর মনোযোগ ধরে রাখতে পারছে না। বুধবার নগরীর বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে।

শিক্ষক ও অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয় বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশ এবং পরে সেই নির্দেশ স্থগিত হওয়া নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশার কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে না। আবার যারা আসছে গরমের কারণে রোজা রেখে তারাও মনোযোগ হারাচ্ছে।

তবে রমজানে বিদ্যালয় খোলা ও বন্ধ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দুই ধরনের মত পাওয়া গেছে। কিছু অভিভাবক বলছেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে পড়া বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। টানা এক মাস বিদ্যালয় বন্ধ থাকলে শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার অনেকে বলছে, রোজা রেখে গরমের মধ্যে ক্লাস করা কষ্টকর।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে রোজার প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হবে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২৫ মার্চ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে।

তাদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী মাহমুদা খানম। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা সোমবার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। মঙ্গলবার এই আদেশ স্থগিত করে দেয় আপীল বিভাগ।

বুধবার নগরীর ন্যাশনাল হাই স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, দশম শ্রেণিতে ৩ জন এবং নবম শ্রেণিতে ৭ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন। ৬ষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেনিতে উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে।

 

 

ন্যাশনাল গার্লস স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, অষ্টম শ্রেণীর ২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিদ্যালয়ে এসেছে মাত্র ৭ জন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হোসনে আরা পলি খুলনা গেজেটকে বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যালয় চলছে। নবম শ্রেণিতে ৭টি এবং অন্যান্য শ্রেণিতে ৬টি করে ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু ৩টি ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে।

নগরীর বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, রোজায় শিক্ষার্থীদের গড় উপস্থিতি ৩৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা খন্দকার জানান, বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৩৩৮ জন শিক্ষার্থী আছে। রমজানের আগে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। গরম ও রোজার কারনে এখন শিক্ষার্থী উপস্থিতির সংখ্যা একটু কম। তবে রমজানের প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিন শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা বেড়েছে।

ন্যাশনাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মহিব্বুল্লাহ বলেন, রোজা রেখে নয়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত ক্লাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টকর। তাই অনেকে ক্লাসে আসছে না। আমাদেরও ক্লাস নিতে একটু হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে আমার ফোন করে তাদের ক্লাসে আসার জন্য বলছি। আমার চেষ্টায় আছি সবাইকে ক্লাসে আনার এবং ভালো ভাবে পাঠদান করানোর।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজানার মা বলেন, ঈদের পরেই অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। ক্লাস না করলেও সমস্যা। আবার রোজা রেখে ক্লাস করা খুবই কষ্টের। দুপুরের পরে মেয়েটার মুখের দিকে তাকানো যায় না।

শিক্ষার্থীরা বলেন, রোজা রেখে ক্লাস করতে একটু কষ্ট হলেও স্কুলে আসতে সবার ভালো লাগছে।

খুলনা গেজেট/ এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!