খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
ভায়রাভাইকে আর্থিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগ

যশোর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়

গেজেট ডেস্ক

আইনি পরামর্শের নামে ভায়রাভাইকে আর্থিক সুবিধা দেয়ায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্লা আমীর হোসেনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত চিঠি ৪ নভেম্বর যশোর বোর্ডে এসে পৌঁছেছে।

রবিবার (৮ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী আর রেজা। তিনি বলেন, চিঠির জবাব প্রস্তুত হচ্ছে, দ্রুতই পাঠানো হবে। চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবকে।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্লা আমীর হোসেন নানা মামলায় আইনি পরামর্শ নেয়ার নামে নিজের ভায়রাভাই ড. একেএম আখতারুল কবীরকে বোর্ডের পক্ষ থেকে সোয়া দুই লাখ টাকার বিল পরিশোধ করেছেন। স্কুল-কলেজের মামলায় শিক্ষা বোর্ডের আইনজীবী নিয়োগের নিয়ম না থাকলেও ড. কবীরকে বোর্ডের পক্ষে আইনজীবী দেখিয়ে বিল পরিশোধ করা হয়। যদিও তাকে বোর্ডের আইন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগও দেয়া হয়নি।

চলতি বছরের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ছয় মাসে ৯টি বিলের অনুকূলে তাকে ২ লাখ ২৮ হাজার ৬২৫ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডের অধীনে স্কুল-কলেজের বিরুদ্ধে করা মামলা ‘নিজ স্বার্থে ও অর্থে’ প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা করার কথা। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ করা আইনজীবীরা জেলা ও উচ্চ আদালতে মামলা পরিচালনা করেন।

এক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের আইনজীবী নিয়োগ করার নিয়ম নেই। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে অধ্যাপক ড. আমীর হোসেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর নিয়ম বদলে গেছে। ড. কবীরকে আর্থিক সুবিধা দিতে আইনী পরামর্শের জন্য তার কাছে মামলা পাঠানো হয়েছে। তিনি নিয়মিত বিলও তুলেছেন।

যশোর জজ কোর্টের আইনজীবী আজিজুর রহমান সাবু বলেন, ১০ বছর ধরে যশোর শিক্ষা বোর্ডের আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। চুক্তি বাতিল করা হয়েছে কিনা জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো চিঠিও পাইনি। তিনি আরও বলেন, বোর্ডের আইন উপদেষ্টা হিসেবে প্রতি মাসে আট হাজার টাকা সম্মানী পাই।

চেয়ারম্যান ড. মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, তৎকালীন চেয়ারম্যানের আমলে আইন উপদেষ্টা আজিজুর রহমান সাবুর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তবে সর্বশেষ বোর্ড সভায় তার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিল। বর্তমানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) এনে কাজ করা হচ্ছে।

ড. মোল্লা আমীর বলেন, ড. একেএম আখতারুল কবীর আমার ভায়রাভাই। এটা কোনো অপরাধ নয়। আইনজীবী (আইন উপদেষ্টা) উচ্চ আদালতের মামলায় মতামত দিতে পারেন না। তাই উচ্চ আদালতের মামলাগুলো ড. কবীরকে দেয়া হয়। ড. কবীর ২০১৫ সাল থেকে শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ আদালতের মামলায় মতামত ও পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তিনি অল্প টাকায় পরামর্শ দেন। এত কম টাকায় পরামর্শ আর কেউ দেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সালে আমীর হোসেন বোর্ডের সচিব থাকাকালে একটি মামলায় আইন উপদেষ্টা আজিজুর রহমান সাবুর কাছে মতামত চেয়েছিলেন। সাবু পরামর্শ না দেয়ায় ওই সময় ড. কবীরের কাছে পরামর্শ নেন আমীর হোসেন। হয়তো সেটিই তিনি এখন উদাহরণ হিসেবে নিচ্ছেন। তারা আরও বলেন, স্কুল-কলেজ সংক্রান্ত মামলায় উচ্চ আদালতের আইনজীবীর জন্য বোর্ডের এমন অর্থ ব্যয়ের নজির নেই। সূত্র : যুগান্তর।

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!