যশোর শিক্ষাবোর্ডে সরকারি কাজে বাধা ও শ্রমিকদের মারপিটের অভিযোগে এক ঠিকাদারকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। আটক কামাল উদ্দিন আহম্মেদ শহরতলির শেখহাটি এলাকার বাসিন্দা ও বোর্ডের বিভিন্ন কাজের ঠিকাদারী করেন। বুধবার রাতে মামলাটি করেছেন শিক্ষাবোর্ডের নিরাপত্তা অফিসার এসএম আনিছুর রহমান।
তবে, আটক কামাল উদ্দিনের স্বজনদের দাবি, বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ নয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কামালকে ডেকে এনে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা এস.এম আনিছুর মামলায় বলেছেন, ঠিকাদার কামাল বোর্ডের পুরাতন কাগজপত্র ক্রয়ের নিলামে অংশগ্রহণ করেন এবং কাজ পান। গত ১৩ মার্চ এসএসসি পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত সিকিউরিটি খাম কেনার জন্য ইজিপির মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ওই টেন্ডারে অংশ নেন কামাল। যা যাচাই বাছাই চলছে। এরমধ্যে বুধবার দুপুরে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে চলমান এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র বোর্ডে আসে। শ্রমিকরা ওইসব উত্তরপত্র সংরক্ষিত স্থানে রাখছিলেন। ওইসময় কামাল ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের কাজে বাধা দেন। তিনি বস্তাবহনকারী শ্রমিক সবুরকে আকস্মিকভাবে মারপিট শুরু করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় কামাল শিক্ষা বোর্ডের সিকিউরিটি খাম ক্রয়ের কাজ তাকে না দিলে তাদের কোনো কাজ করতে দেবেন না বলে হুমকিও দেন। একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে তাকে ধরে আনিছুরের ঘরে নিয়ে যান। এরপর এ ধরনের কর্মকান্ডের জন্য তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ গিয়ে কামালকে আটক করে। এ ঘটনায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ লিখিত এজাহার দিয়েছেন। যা মামলা হিসেবে রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, আটক কামালের স্বজনরা দাবি করেছেন, তার ইউনিক এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বোর্ড পলি কটেড জুট ব্যাগ ও সিকিউরিটি ইনভিলাপ সংগ্রহের জন্য ইপিজির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে। ওই দরপত্রে ইউনিক এন্টারপ্রাইজ সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়। একপর্যায়ে কিছু মালামাল দ্রুত সরবরাহের জন্য বোর্ড কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করে। যা কামাল প্রস্তুতও করেন। পরবর্তীতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাকে কাজ দেয়া নিয়ে তালবাহানা শুরু করে। এমনকি নানা ধরনের হুমকি ধামকিও দেয়। এ কারণে কামাল বাধ্য হয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিব, টেন্ডার কমিটির আহ্বায়কসহ নয়জনকে আদালতের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে কামালকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশে দেয়া হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
খুলনা গেজেট/কেডি