যশোর শিক্ষাবোর্ডে বদলে যাচ্ছে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন পদ্ধতি। বৃহস্পতিবারের (১৫ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষা কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করেননি শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর আহসান হাবীবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা কক্ষে যাবেন না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর যশোর শিক্ষাবোর্ডে এটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এই সংস্কৃতি পরীক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষা কক্ষে যে কেউ প্রবেশ করলে পরীক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হয়। এমনকি কখনো কখনো তৈরি হয় ভীতিকর অবস্থা। ফলে পরীক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে কারণে পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শন এড়ানোর এই সিদ্ধান্ত। বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, কক্ষে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সঠিকভাবে পরীক্ষা গ্রহণে তারাই যথেষ্ট। এর বাইরে অতিরিক্ত লোকজনের যাতায়াত সুষ্ঠু পরীক্ষায় ক্ষতির কারণে হতে পারে। শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও জিলা স্কুল কেন্দ্রে যান। তিনি কেন্দ্রের সার্বিক দিক পরিদর্শন করলেও কোনো কক্ষে প্রবেশ করেননি।
।। পরীক্ষা কক্ষে ঢোকেননি শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান।।
এদিকে, এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় এক হাজার ১৩৩ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর মধ্যে খুলনায় ১২৯, বাগেরহাটে ৭৫, সাতক্ষীরায় ৯০, কুষ্টিয়ায় ১২৯, চুয়াডাঙ্গায় ১০৮, মেহেরপুরে ৭১, যশোরে ১৯২, নড়াইলে ৭৩, ঝিনাইদহে ১৮৫ ও মাগুরায় ছিল ৮১ জন।
পরীক্ষার প্রথম দিন সকাল নয়টার মধ্যে স্ব স্ব পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত হয় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। সাড়ে নয়টায় কেন্দ্রের প্রবেশ পথ খুলে দেওয়া হয়। দশটা বাজার সাথে সাথে সরবারহ করা হয় প্রশ্ন। এর আগে পৌঁনে দশটায় দেওয়া হয় খাতা।
এবার ২৯৩ টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় একটি বেশি। ২০২৩ সালে কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২৯২ টি। গত বছর এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিল এক হাজার ৮৩৪ জন। এ বছর যশোর বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে এক লাখ ৬২ হাজার ৭০০ পরীক্ষার্থী ফরমপূরণ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক হাজার ১৩৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি। কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বোর্ডের চেয়ারম্যান শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানান।
শহর ও শহরতলির একাধিক কেন্দ্র পরিদর্শন করে সুশৃঙ্খল পরিবেশ চোখে পড়ে। শহরের আব্দুস সামাদ মেমোরিয়াল একাডেমি কেন্দ্রের পরিবেশ ছিল চোখেপড়ার মতো। মূল ফটকের মধ্যে একজন অভিভাবকও প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারেনি। পরীক্ষার্থীরা স্বচ্ছন্দে প্রবেশ করে যার যার মতো করে পরীক্ষা কক্ষ ও আসন খুঁজে নেয়। তবে এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতার জন্য শিক্ষকরা প্রস্তুত ছিলেন।
এ ব্যাপারে কেন্দ্র সচিব সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা বরাবরই সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করি। চেষ্টা করি ছেলে-মেয়েরা যাতে নির্বিঘেœ পরীক্ষা দিতে পারে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষার প্রথমদিন অতিবাহিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কেউ বহিষ্কার হয়নি। চেয়ারম্যান বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
খুলনা গেজেট/কেডি