যশোরে ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১১শ’ ২০ জন তথ্য সংগ্রহকারী মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবেন। তাদের তদারকি করবেন ২শ’ ৩৩ জন সুপারভাইজার। প্রথম দফায় আগামী ২০ মে থেকে তিনটি উপজেলায় এ কাজ শুরু হচ্ছে। উপজেলা তিনটি হচ্ছে, যশোর সদর, অভয়নগর ও বাঘারপাড়া। এই তিনটি উপজেলায় তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ দেয়া হবে ৪শ’ ৭৮ জনকে। আর সুপারভাইজার থাকবেন ১শ’ তিনজন। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। এই কার্যক্রমে ২০০৭ সালের পহেলা জানুয়ারি বা তার আগে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একইসাথে তথ্য নেয়া হবে ১৬ বছর বয়সীদেরও। যাতে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার সাথে সাথেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় তারা যুক্ত হতে পারেন। তারা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইসি নিয়োজিত কর্মীরা তথ্য নেয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশ দিয়ে এবং ছবি তুলে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
একইসাথে হালনাগাদ ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম বাদ দেয়া হবে। আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের বিষয়টিও করা হবে তালিকাভুক্ত।
সূত্র জানিয়েছে, নিবন্ধনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পূরণকৃত নিবন্ধন ফরম-২ এর সাথে অনলাইন জন্মসনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) অথবা এসএসসি বা সমমান পরীক্ষা বা যে কোনো পাবলিক পরীক্ষা পাসের সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে। এছাড়া, নাগরিক সনদ, প্রত্যয়নপত্র/বাড়ি ভাড়া/হোল্ডিং ট্যাক্স/যে কোনো ইউটিলিটি বিল পরিশোধের রশিদের কপি জমা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
সরকার বাংলাদেশের হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বীকৃতি দেয়ায় তারা ভোটার তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্তি হতে পারবেন। তবে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তাদের শনাক্তকরণের জন্য সমাজসেবা অফিসের প্রত্যয়নপত্র অথবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রত্যয়নপত্র লাগবে। এ বিষয়ে যথাযথ দৃষ্টি রাখার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যাতে তারা যেন ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোনোভাবেই বঞ্চিত না হন।
এক ভোটার এলাকা থেকে অন্য ভোটার এলাকায় স্থানান্তরের লক্ষ্যে ফরম-১৩ (স্থানান্তর) পূরণপূর্বক প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ সরাসরি স্থানান্তরিত এলাকার থানা/উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেয়ার পর যথাযথ যাচাই-বাছাই ও তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ভোটারের ভোটার এলাকা স্থানান্তর করা হবে।
এছাড়া, তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি গিয়েও ভোটার স্থানান্তরের তথ্য সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কার্যালয়ে পাঠাবেন।
এবার তিন বছর পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শেষ হবে হালনাগাদ কার্যক্রম। তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজার পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসার আনিছুর রহমান বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণে তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করতে ভাইভা নেয়া হয়েছে। আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ মে তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
খুলনা গেজেট/ এস আই