যশোরে স্কুলছাত্র চয়ন দাস (১৭) হত্যায় জড়িত দু’যুবককে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আটক করেছে। তারা আদালতে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
আটক দু’জন হলো, সদর উপজেলার শানতলা দাসপাড়ার পরিতোষ কুমারের ছেলে হৃদয় কুমার দাস (১৯) ও নির্মল দাসের ছেলে প্রদীপ দাস (২৩)।
পিবিআই জানিয়েছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে চুড়ামনকাঠি কুন্ডুপাড়ায় নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে খাবার নিয়ে চুড়ামনকাটি দাসপাড়ার কয়েকজনের সাথে শানতলা দাসপাড়ার ছেলেদের গোলযোগ হয়। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন আপোষ-মিমাংসা করে দেন। পরবর্তীতে ২৪ ফেব্রুয়ারি ঝিকরগাছার মল্লিকপুরে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে চুড়ামনকাঠি দাসপাড়ার ছেলেরা যায়। আসামিরাও একই স্থানে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান দেখতে যায়। সেখানে উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায় আসামিরা চয়নের বন্ধু জীবন দাস ও স্বাধীন দাসকে চাকু দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চয়নসহ কয়েকজন রাত পৌনে একটার দিকে বাড়ি ফিরছিল। পথে শানতলা পেপসি কোম্পানীর ১ নম্বর গেটের সামনে পরিকল্পিতভাবে হৃদয় ও প্রদীপসহ দাসপাড়ার ১৫/২০ জন তাদেরকে ধরে মারপিট করে। আসামিরা চয়নকে গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে রাস্তার উপর ফেলে পালিয়ে যায়।
পিবিআই জানিয়েছে, হত্যা ঘটনার পর তাদের সদস্যরা বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যাায়ে সদর উপজেলার বসুন্দিয়া বাজারের একটি সেলুন থেকে গত রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রদীপকে এবং রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দিকনগর গ্রামের খোকন দাসের বাড়ি থেকে হৃদয়কে আটক করা হয়। এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকিয়া সুলতানা ওই স্বীকারোক্তি রেকর্ড করেছেন বলে পিবিআই জানিয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী বলেন, নিহতের শ্বাসনালী ও কাঁধের পেছনের হাড়ভাঙ্গা ও থুতনিতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নিহতের থুতনিতে সামান্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে না কি বা সে গাড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিল কি না বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। পোস্টমোর্টেম রিপের্টের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে হত্যা মামলা হিসাবে বাদির দেয়া অভিযোগ রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
খুলনা গেজেট/কেডি