যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি এলাকা থেকে ৬ ট্রাক কাঠ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সাতদিন পর সেই কাঠের সন্ধান মিলেছে মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমাখালী বাজারে। অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সালাহউদ্দিন পুলিশকে কাঠের বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
ভুক্তভোগী ঠিকাদার মেসার্স রাকিব হাসান যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের গাছ কাটার কাজ বন্ধ রাখার জন্য যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি আত্মসাৎকৃত বিপুল পরিমাণ ওই কাঠ উদ্ধারে আইনি সহায়তা পেতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় যশোর ও শালিখা থানায় লিখিত এবং বন বিভাগ মাগুরায় মৌখিক অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক রাকিব হাসান বলেছেন, যশোর-ঝিনাইদহ সড়ক উন্নয়ন কাজে জীবিত ও মরা গাছ বিক্রির দরপত্র আহবান করে যশোর জেলা পরিষদ। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সড়কের ২নং লটের ৩০১-৬০০ নং পর্যন্ত গাছ কেনার অনুমতি পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাকিব হাসানের মালিক রাকিব হাসান।
এরপর ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর গাছগুলো কাটার জন্য ৫০ ভাগ ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নুসরাত এন্টারপ্রাইজের মালিক সালাহউদ্দিন সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। এ চুক্তির শর্ত সাপেক্ষে গাছ কাটার কাজ শুরু হয়। কিন্তু গত সাতদিন আগে গোপনে যশোর সদরের চুড়ামনকাঠি এলাকায় কাজের সাইট থেকে দুই গাড়ি (৯শ’ সিএফটি) কাঠ ট্রাকে করে নিয়ে যান সালাহউদ্দিন। এতে উভয় ঠিকাদারের মধ্যে সুসম্পর্ক ব্যাহত হয় এবং বাকি গাছগুলো কাটায় প্রতিবন্ধকা সৃষ্টি হয়।
এরপর বিষয়টি সমাধানের জন্য গত ১২ এপ্রিল উভয় পক্ষ বসার দিন ধার্য করে। কিন্তু ১১ এপ্রিল সকালে গোপনে দুটি ক্রেন দিয়ে রাকিব হাসানের ভাগের ৪ ট্রাক কাঠ সালাহউদ্দিন সীমাখালী বাজারে নিয়ে তার দোকানের পিছনে ও বাড়ির মসজিদের পাশে রেখেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে পরদিনই ওই সড়কের গাছ কাটার কাজ বন্ধ রাখার জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার রাকিব হাসান। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কাঠ উদ্ধার ও আইনি সহায়তা পেতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় যশোর ও শালিখা থানায় লিখিত এবং বন বিভাগ মাগুরায় মৌখিক অভিযোগ করেন। কিন্তু আজো সেই কাঠ উদ্ধার হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ঠিকাদার সালাহউদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাগুরা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা তপেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, প্রথম পক্ষ সরাসরি থানায় অভিযোগ করবে। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। অথবা আদালতে মামলা করার পর কাঠগুলো অবৈধ প্রমাণিত হলে বনবিভাগকে তা জব্দ করতে নির্দেশ দিলে তখনই ব্যবস্থা নিতে পারবো।
যশোর জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি শুনেছি কাজের সাইটে দুই পার্টনারের মধ্যে একটা সমস্যা হয়েছে। তবে কাঠ চুরি হয়েছে কিনা সরেজমিন তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না।
আত্মসাতকৃত ৬ ট্রাক কাঠের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার এসআই তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বুধবার বিকেলে সীমাখালী বাজারের কলু বাড়ির মোড়ে অভিযুক্ত ঠিকাদারের সারের দোকান ও বাড়ির মসজিদের পাশে কাঠগুলো পাওয়া গেছে। বৈধতা যাচাইয়ের জন্য উভয় পক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই