যশোরে অভয়নগরে কলাগাছ থেকে তৈরি হচ্ছে আঁশ যুক্ত সুতা। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা বিদ্যুৎ চালিত মেশিন দিয়ে এই সুতা তৈরি করা হচ্ছে। ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকে সুতা তৈরিকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন কৃষি বিভাগ। আর সহযোগিতার আশ্বাস বিসিক কর্মকর্তার।
যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের মুনসেফপুর গ্রামের শিমুল হোসেন নিজ বাড়িতে কলা গাছ থেকে সুতা তৈরির মেশিন বসিয়েছেন। ইতিমধ্যে কলাগাছ দিয়ে সুতা তৈরি করছে সে। একদিনে ১০-১৫ কেজি করে সুতা তৈরি করছে। নিয়মিত তারা মাঠ থেকে পরিত্যক্ত এসব কলাগাছ ইঞ্জিনচালিত ভ্যান যোগে বাড়ি নিয়ে আসছে। প্রতিটি কলাগাছের দুই দিকের অংশ কেটে ফেলে খোলস বের করে মেশিনে দেওয়া হচ্ছে। মেশিনের মধ্যে থেকে বের হয়ে আসছে আশ যুক্ত সুতা। এই সুতা রোদে শুকানো হচ্ছে। শুকানোর পর এই সুতার রং হচ্ছে সোনালী।
কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির উদ্যোক্তা শিমুল হোসেন বলেন, প্রথমে আমরা কলাবাগান থেকে কলা গাছ গুলো সংগ্রহ করি। তারপরে ছালগুলো ছাড়িয় মেশিনে দিয়ে সুতা তৈরি করতে হয়। সুতাটা আসার পর পানি দিয়ে ধুয়ে রোদ্রে দিলে কাপড় শুকানোর মতো শুকিয়ে গেলে এটি আমরা বিক্রি করে থাকি। কলাগাছের সুতার বাজারে খুব চাহিদা রয়েছে। প্রতিকেজি সুতা দেড় থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ কেজি সুতা একজন মানুষ তৈরি করতে পারে। খরচ বাদে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯শ’ টাকা লাভ হয়।
আরেক উদ্যোক্তা এম.আর রুবেল বলেন, এই সুতা পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আরো বেশি সুতা উৎপাদন করা সম্ভব।
ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকে সুতা তৈরিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন যশোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, একদিকে ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকে সুতা তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে বর্জ্য দিয়ে জৈব সার ও হচ্ছে। এতে উভয় লাভবান হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করর্পোরেশন, (বিসিক) যশোরের ডিজিএম মোঃ গোলাম হাফিজ বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন। সরকারি নিয়ম মেনে কেউ সুবিধা চাইলে অবশ্যই দেওয়া হবে। স্বল্প সুদে এসব তরুণ উদ্যোক্তাদের ঋণের ব্যবস্থা করা হলে এটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। সেই সাথে বিদেশে সুতা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই