যশোরে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েই চলেছে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর হার। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। গত ২৪ ঘন্টায় যশোরে ভারত ফেরত ৮জনসহ ৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন পাঁচ জন। যা যশোরে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
মৃতরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারণের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৫৫), ঝিকরগাছার মাটিপুকুরের সাত্তার হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৬), শার্শার ধান্যখোলা গ্রামের ঈমান আলির ছেলে আতিয়ার রহমান (৭৫), বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের প্রশান্ত ঠাকুর (৭০) ও মণিরামপুরের চালুয়াহাটি ইউনিয়ের সিংহের পারখাজুরা গ্রামের সাজেদা খাতুন (৫০)।
এদেরমধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের রেডজোনে আঞ্জুয়ারা বেগম ও আলমগীর হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। আতিয়ার রহমানের করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ইয়োলোজোনে। প্রশান্ত ঠাকুরের নিজ বাড়িতে ও সাজেদা খাতুন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে, সোমবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে একশ’ ৫২ জনের করোনা পরীক্ষায় ৫৩ জনের শনাক্ত হয়েছে। একইসাথে জেলায় ৯০ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার দুইশ’ ৮৮ জন। সুস্থ হয়েছে ছয় হাজার ছয়শ’ ৭৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯৪ জনের।
যশোর পৌরসভা থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় নয়টি ওয়ার্ডে নয় জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুই, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুই ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এক ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জন করে রয়েছে। এ পর্যন্ত পৌর এলাকায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা আটশ’ ৭৬ জন।
জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ জানান, হাসপাতালের রেডজোনের ৮০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ৬৭ জন। এদের মধ্যে ভারত ফেরত ২৯ জন। গত ২৪ ঘন্টয় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন। এ ওয়ার্ড থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১১ জন।
তিনি আরো জানান, ইয়োলোজোনো ১৯ বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২৯ জন। ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৩ জন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত ফেরত করোনা আক্রান্ত আটজনকে রেডজোনে ভর্তি করা হয়েছে। ১৩ জুন জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের নমুনা পরীক্ষায় আট জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ভারত ফেরত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ জনে। হাসপাতালের রেডজোনে দু’জনের ও ইয়োলোজোনে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন বুথের সামনে প্রতিদিনই মানুষের দীর্ঘ লাইন হচ্ছে। নারী ও পুরুষ একই লাইনে দাড়াচ্ছেন। সেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। নারী, শিশু ও বয়স্করা প্রচন্ড রোদে দাঁড়িয়ে হাপিয়ে উঠছেন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে এখানে রোগী ছাউনী স্থাপনে একাধিক বার আশ্বাস দিলেও তা আজো বাস্তবায়ন হয়নি।
খুলনা গেজেট/ এস আই