ফুঁসলিয়ে ভারতের গুজরাটে নিয়ে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় যশোরের বসুন্দিয়া বানিয়ারগাতীর আলোচিত প্রতারক কামরুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের মামলার পর তাকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর হত্যার দায় স্বীকার করেছে কামরুল ইসলাম।
গত ১৫ এপ্রিল যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া বানিয়ারগাতী গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম (৩২) তার স্ত্রী সালমা খাতুনকে (২৪) ফুঁসলিয়ে ভারতের আন্দাবাদ প্রদেশের গুজরাট শহরে নিয়ে যায়। চাকরি করানোর জন্য তাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত সালমার বাবা শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেড় বছর আগে বসুন্দিয়া গ্রামের কামরুলের সাথে তার মেয়ে সালমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কয়েকমাস যেতে না যেতেই মেয়ে সালমার প্রতি জামাই কামরুল নির্যাতন ও মারধর শুরু করে। এমনকি মেয়ে সালমার ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণালংঙ্কার বন্ধক রেখে ২৬ হাজার টাকা নেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম অশান্তি শুরু হয়। স্বামী কামরুল সালমাকে বুঝিয়ে তারা স্বামী স্ত্রী চাকরি করে স্বর্ণালংঙ্কার ফিরিয়ে নেবে এবং বাড়ি ঘর মেরামত করবে বলে ভারতে নিয়ে যায়। ১৯ এপ্রিল থেকে ৬ মে সকাল ১১ টার মধ্যে কামরুল ভারতে সালমাকে হত্যা করে। এরপর ৮ মে রাত ৮ টায় সে যশোরে ফিরে আসে। গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে সালমার বাবা মা সালমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে বিভিন্ন টালবাহানার এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেয় কামরুল। ওইদিন রাতেই তারা কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দেন। এরপর গত ১০ মে ঘাতক কামরুলকে কোতোয়ালি পুলিশ আটক করে। কামরুল স্ত্রীকে ভারতে নিয়ে হত্যার ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে থানা সূত্র জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কামরুল ও তার স্ত্রী সালমার ২টি পাসপোর্ট, মোবাইল ও স্ত্রী সালমার একটি ব্যাগ ঘাতক স্বামী কামরুলের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সালমার বাবা শহিদুল ইসলাম ৮ মে যে অভিযোগ দেন তা হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। পুলিশ আরো জানায়, সালমা গত ৬ মে সকাল ১১ টার দিকে বাবা মা ও বোনের সাথে শেষ কথা বলে। এর কিছুক্ষণ পরেই স্বামী কামরুল স্ত্রী সালমাকে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে পুলিশ ভারতের গুজরাট থানায় যোগাযোগ করলে এ হত্যাকান্ডের সত্যতাও মিলেছে। এমনকি এই হত্যার সংবাদ গুজরাট এলাকার একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। নিহত সালমার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ প্রশাসন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে থানা সূত্র জানিয়েছে।