খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩ মে, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী আর নেই
  ৪৯ টাকা কমে ১২ কেজি এলপিজির নতুন দাম ১ হাজার ৩৯৩ টাকা
  অর্থ আত্মসাৎ মামলায় জামিন পেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

মৃৎশিল্পে দুর্দিন : বিনা সুদে ঋণ দাবি

শেখ বদর উদ্দীন

খানজাহান আলী থানাধীন গিলাতলা দক্ষিণপাড়ার পালপাড়ায় মৃৎশিল্পের গ্রাম নামে খ্যাত । এ গ্রামে প্রায় ৭ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি হলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ব্রিটিশ আমল থেকে মৃৎশিল্পের কাজ করে আসছে। মৃৎশিল্পটির মূল উপকরণ হচ্ছে মাটি। কালের বিবর্তনে মাটির বড়ই অভাব। যদিও মাটি কিনতে পাওয়া যায়। তবে চড়া দামে কিনতে হয় সে মাটি। ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষও এ পেশা বাদ দিয়ে কৃষি কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। তবে এখনও মৃৎশিল্পকে প্রধান পেশা হিসেবে  ঐতিহ্য ধরে রেখেছে সেখানকার প্রায় এক হাজার মানুষ।দক্ষিণপাড়ার পালপাড়ায় ৩০টি কারখানায় তারা কাজ করেন।

খুলনা শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে গিলাতলা দক্ষিণপাড়া পালপাড়া গ্রাম। এ গ্রামের নির্মিত মৃৎশিল্প কারখানায় নারী- পুরুষ সবাই মিলে কাঁদামাটি মেখে প্রতিনিয়ত কাজ করে আসছে। এদের নিপুন হাতের শিল্পকর্মে তকতকে কাঁদামাটি হয়ে ওঠে নিত্য ব্যবহার্য বাসনপত্র, ফুলের টব, নান্দা, রিংস্লাব ও খেলনাসহ কারুকাজ করা শো-পিচ।

তবে মাটি ও আনুষঙ্গিক জিনিসের দাম বেড়েছে। প্লাস্টিকের চমকপ্রদ দ্রব্যাদির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নিপুণ শিল্পকর্ম খচিত মাটির জিনিসের কদর কিছুটা কমে গিয়েছে। দিন দিন মাটিসহ অন্যান্য সরাঞ্জামের দাম কয়েকগুণ বাড়লেও বাড়েনি মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দাম।

এখানকার মৃৎশিল্পের মালিক বিশ্ব পাল জানান, কিশোর বয়সে মনের অজান্তেই প্রতিবেশীদের দেখা দেখিতে এই কুমার জীবনে জড়িয়ে গেছি। রাত দিন কাঁদামাটির কাজ করে জীবন চালিয়ে আসছি। পাশাপাশি আমার কারখানায় কিছু মানুষের কর্মের ব্যবস্থা করতে পেরে অত্যান্ত ভালো লাগছে। তিনি আরও জানান,আগে মাঠ থেকে মাটি সংগ্রহ করা হতো। এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। মাটির দাম বেড়েছে। আগে এক ট্রলি মাটির দাম ছিল ১ থেকে দেড়শ’ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮শ’ থেকে হাজার টাকা। অন্যান্য জিনিসের দাম বাড়লেও মাটির তৈরি জিনিসের দাম বাড়েনি। তারপরও পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এ পেশা ছাড়তে পারিনি। বছরের মাত্র ৮ থেকে ৯ মাস চলে এ ব্যবসা। আনুসঙ্গিক খরচ মিটিয়ে কোন রকম লাভ থাকে। তবে সরকার যদি বিনা সুদে সহজ শর্তে কুমোরদের ঋণের ব্যবস্থা করতো তাহলে সবাই স্বাবলম্বী হতে পারতো।

ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন জানান, মৃৎশিল্পীরা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারের ঘোষিত স্যানিটেশন ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত করতে কুমারদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এলাকার লোকজন স্বল্পমূল্যে স্লাব কিনে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করছে। এলাকা পরিদর্শন করে কুমারদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!