খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পাচার মামলায় পিবিআই’র অভিযান

মৃত মজনু জীবিত উদ্ধার, স্ত্রীও ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ভারতে পাচার করে মজনু বিশ্বাস (৪৪) ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন (২৫)। সেই ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। এরপর গ্রেপ্তার এড়াতে তারা আত্মগোপন করেন। এমনকি মজনু মারা গেছেন বলেও প্রচার করা হয়। শুধু তাই নয়, ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মজনুর মৃত্যু সনদও নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর ‘মৃত’ মজনুকে জীবিত অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে। সাথে তাঁর স্ত্রীও রয়েছেন।

৯ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদেরকে ঝিনাইদহ সদরের জোড়াপুকুর পাগলাখানা রোডস্থ খলিলের বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। আটকরা ঝিনাইদহ সদরের সুরাট পূর্বপাড়ার বাসিন্দা। আটকদের সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পিবিআই এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অনুমানিক তিন বছর আগে যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি জামরুলতলা এলাকায় বিয়ে হয় ওই নারীর। বিয়ের পর তারা স্বামী-স্ত্রী শেখহাটি জামরুলতলার আসাদের টিনসেট বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। একই বাড়িতে মজনু বিশ্বাস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। এ সুযোগে মজনু বিশ্বাস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুনের সাথে ওই নারীর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে সখ্যতা হলে প্রতারণা করে তাঁকে ভারতে পাচার করে পতিতাবৃত্তি করানোর জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে এই দম্পতি। সে লক্ষ্যে গত বছরের ২২ মে তাকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে গুজরাটে নিয়ে যায়। সেখানে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে ওই নারীকে বিক্রি করে দেয়। ওই নারী বুঝতে পেরে তাদের কাছ থেকে চলে আসার চেষ্টা করে। কিন্ত আসামিরা খুন করার হুমকি দিয়ে তাঁকে আটকে রাখে। প্রায় ৭ মাস পরে বন্দিদশা থেকে পালিয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে এসে আদালতে মামলা করেন ওই নারী। মামলাটি পিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করে আসামি মজনু বিশ্বাস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুনকে রবিবার (৯ এপ্রিল) ঝিনাইদহের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর সোমবার (১০ এপ্রিল) যশোর কোতোয়ালি থানায় শহরের পুরাতন কসবা বিবি রোড কদমতলার ভিকটিমের পিতা মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় আটক স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়।

আসামিরা হলো, ঝিনাইদহ জেলা সদরের সুরাট পূর্বপাড়া গ্রামের মজনু বিশ্বাস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন (২৫), নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার কুমড়ি পূর্বপাড়া গ্রামের সোহাগ সরদার ও তার স্ত্রী মিম বেগম জয়া ওরফে রিয়াসহ অজ্ঞাত ৩/৪জন।
এদিকে, ১০ এপ্রিল গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করলে তারা পাচারের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।

তিনি জানান, মামলা তদন্তকালে মজনু বিশ্বাস মৃত বলে জানা যায়। এমনকি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মজনু বিশ্বাসকে মৃত হিসেবে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন। এ কারণে মামলার কার্যক্রম খানিকটা থমকে ছিল। পরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!