যশোরের অভয়নগর উপজেলায় রক্তিম রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল গাছের ফুল। শুধু ফুল আর ফুল পাতা নেই, ফুটন্ত এ ফুল যেন দৃৃষ্টি কেড়ে নেয় সবার মন। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার বাঘুটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় দেখা মিললো ফুটন্ত ফুলের রক্তলাল শিমুল গাছের।
গাছে গাছে ফুটন্ত রক্ত লাল শিমুল যেন যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে এই লাল রঙ। এরপরই এই রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। তুলার ব্যবহার নেই বললেও চলে।
আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা শোভাবর্ধনে ঝুলে থাকতো শিমুল ফুল।
তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে সেখানে চোখে পড়েনা রক্তলাল শিমুল গাছ। মূল্যবান শিমুল গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
উপজেলার নওয়াপাড়া দক্ষিণ এলাকার বৃদ্ধ জগদিশ অধিকারী বলেন, শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। ছোট শিমুল গাছের মাটির নিচের অংশ মূলের উপকারিতা অনেক। ভেষজ চিকিৎসা কাজে এই গাছের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। গ্রামঞ্চলের মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূলকে ব্যবহার করতো।
পল্লী মঙ্গল মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ খায়রুল বাশার জানান, গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক, বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন
নজিরও আছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের।
অভয়নগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে শিমুল গাছ। শিমুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরিকৃত ফার্নিচার খুব বেশি স্থায়ীত্ব হয় না। এছাড়া বিভিন্ন ফোমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার কমে গেছে। ফলে শিমুল গাছ হারিয়ে
যাওয়ার পথে।
খুলনা গেজেট/ টিএ