যশোরের মণিরামপুরে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর অজ্ঞাত কারণে মামলা না নিয়ে অভিযুক্তদের থানায় ডেকে ছিনতাইকৃত টাকার মধ্যে কিছু টাকা ফেরত দিয়ে মিটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এসআই কাজী নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে।
গত বুধবার (১৯ মে) সকাল ৭ টার দিকে মণিরামপুর-রাজগঞ্জ সড়কের কাশিপুর-মান্দারতলা নামক স্থানে একটি ইটভাটার সামনে ধান ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
জানাযায়, ঘটনার দিন সকালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের তুজলপুর গ্রামের কবির হোসেনের পুত্র রাসেল হোসেন (২২) নামের এক ট্রলি চালক ধান নিতে মণিরামপুরে আসছিলেন। তার কাছে ধান কেনার জন্য ধান ব্যবসায়ী সরোজিতের দেয়া ৬৯ হাজার ৫শ’ টাকা ছিল।
অভিযোগ রয়েছে পথিমধ্যে রাজগঞ্জ সড়কের কাশিপুর-মান্দারতলা নামক স্থানে ইটভাটার কাছে পৌঁছুলে এক পৌর কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তার গতিরোধ করে পৌর এলাকার বিজয়রামপুর গ্রামের সবুজ হোসেন ও হাবিবুর রহমানসহ ৫/৬ জন। ঘটনার সময় ছিনতাইকারীরা ট্রলি চালক রাসেলকে মারপিট করার এক পর্যায় সে নিজেকে রক্ষা করতে দৌঁড়ে পাশ্ববর্তী আমির হোসেনের বাড়ির একটি ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। এসময় ছিনতাইকারীরা ওই বাড়ীতে প্রবেশ করে ঘরের দরজা ভেঙ্গে রাসেলকে ধরে পুনরায় মারপিট করে তার নিকট থেকে উল্লেখিত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।
এদিন বেলা ১১ টার দিকে ট্রলি চালক রাসেল মণিরামপুর থানায় দুই জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে দায়িত্ব দেয়া হয় এসআই কাজী নাজমুস সাকিবকে।
এরই মধ্যে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা জানার পর ধান ব্যবসায়ী সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া থানার ঝাঁউডাঙ্গা গ্রামের সরোজিতসহ এলাকার কয়েকজন মণিরামপুর থানায় আসেন। এক পর্যায় এসআই নাজমুস সাকিবের কথিত তৎপরতায় ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত কয়েকজন থানায় আসলে তাদের মধ্যে দুই জনকে ট্রলি চালক রাসেল চিহ্নিত করেন।
অভিযোগ উঠেছে উক্ত ঘটনায় মামলা না নিয়ে থানায় বসে এসআই নাজমুস সাকিবের মধ্যস্থতায় ছিনতাইকৃত ৬৯ হাজার ৫’শ টাকার মধ্যে ৪০ হাজার টাকা ব্যবসায়ী সরোজিতের হাতে তুলে দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।
এ ব্যাপারে ধান ব্যবসায়ী সরোজিত কুমার জানান, পুলিশ ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না নিয়ে তাকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাড়ি যেতে বললে তিনি থানা থেকে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই নাজমুস সাকিব তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবী করেন, উভয় পক্ষ থানায় বসে ধান ব্যবসায়ী সরোজিতের খোয়া যাওয়া সমুদয় টাকা ফেরত পেয়ে মিমাংসা করে নিয়েছে।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ উপজেলার নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে আসবেন বলে তিনি ব্যস্ত ছিলেন। তার পরেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি