খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  আজ খুলছে সব স্কুল-কলেজ
  রাতভর জ্বলছে সুন্দরবন, দেড় কি.মি. এলাকাজুড়ে আগুন

মানুষের শরীরে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কত দিন?

গেজেট ডেস্ক

রাজধানীর একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত আছেন আফরিন আখতার। প্রতিদিনই পিপিই, মাস্ক, ফেইস শিল্ড নিয়ে কাজ করতে হয় তাকে। যা নিয়ে বেশ বিরক্ত তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে এর কোন বিকল্পও নেই তার কাছে।

তিনি বলেন, “প্রতিদিনই পিপিই পরে কাজ করা খুবই কষ্টকর। বলে বোঝানো যাবে না। এভাবে কষ্ট করা, পরিবার থেকে পৃথক কিংবা সবসময় সতর্ক থাকা -এসব আর ভালো লাগে না। ভ্যাকসিন এলে হয়তো এগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।” আফরিন আখতারের মতো বিশ্বব্যাপী মানুষ অপেক্ষায় আছে ভ্যাকসিনের।

ভ্যাকসিন এতোটা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

করোনাভাইরাস মহামারিতে বৈশ্বিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৮ কোটিরও বেশি মানুষ। মারা গেছেন ১৮ লাখেরও বেশি। ভাইরাস আতংক, লকডাউন সবমিলিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারাত্মকভাবে। বৈশ্বিকভাবে ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে নেমেছে ২শ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান। ভ্যাকসিন রাজনীতি, ভ্যাকসিন বাণিজ্য এসব বিষয়েও কথা হচ্ছে। কিন্তু ভ্যাকসিন কেন এতো গুরুত্বর্পূণ হয়ে উঠলো?

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমার সাহা বলছেন, এর কারণ হচ্ছে ভ্যাকসিন ছাড়া এ‌ই মহামারি মোকাবেলার আর কোন বাস্তবসম্মত এবং আপাত কার্যকর উপায় নেই।

ভ্যাকসিনেই কি মুক্তি মিলবে?

দেশে পাওয়ার ক্ষেত্রে যে ভ্যাকসিনটি এখন আলোচনায় আছে সেটি তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এছাড়াও বৈশ্বিকভাবে আরো কিছু উৎস থেকেও ভ্যাকসিন পাওয়ার চেষ্টায় আছে বাংলাদেশ। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন নেয়া মানেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার গ্যারান্টি নয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাজুল ইসলাম এ বারি বলেছেন, টিকা মানুষের শরীরে কতদিন কার্যকর থাকবে সেটা নিশ্চিত নয় কেউই।

“টিকার সুরক্ষা কি মানুষের শরীরে তিন মাস থাকবে, ছয় মাস থাকবে নাকি একবছর থাকবে সে বিষয়ে কেউই নিশ্চিয় নয়। কারন এটা অজানা। এর পরে বুস্টার ডোজ নিতে হবে কি-না, সেটাও অজানা। সুতরাং টিকা নিলেও মানুষকে আরো কিছুদিন সতর্ক থাকতেই হবে।”

চাইল্ড হেলথ রিসাচর্ব ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমার সাহা বলেন, যে কোন টিকা আসার আগে বেশ কয়েকবছর সময় নিয়ে এর কার্যকারিতাসহ বিভিন্ন বিষয় দেখা হয়। এবার একটি নজীরবিহীন পরিস্থিতি। ফলে অনেক কিছু নিয়েই প্রশ্ন আছে।

তবে তিনি এটাও বলেছেন, কতদিন সুরক্ষা থাকবে সেটা অজানা হলেও সুরক্ষা যে পাওয়া যাবে এ বিষয়টা কোম্পানিগুলো পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছে।
বাংলাদেশে কত মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে? কোন একটি দেশে সাধারনত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এলেই দেশব্যাপী সুরক্ষাবলয় তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে শতকরা ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

সেক্ষেত্রে সংখ্যাটি হবে সাড়ে ১৩ কোটি’রও বেশি। সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, চাহিদা অনুযায়ী টিকা সংগ্রহ এবং প্রয়োগে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে।

টিকার পরেও থাকবে স্বাস্থ্যবিধি

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা আরো বলেন, টিকার পরেও মানুষকে সামাজিক দুরত্ব, মাস্ক পরা অবব্যাহত রাখতে হবে।

“সতর্ক থাকতেই হবে। যেহেতু টিকার কার্যকারিতা শতভাগ জানা নেই। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ এড়াতে সতর্ক থাকাই নিরাপদ।”

সূত্র : বিবিসি বাংলা।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!