খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর কারওয়ান বাজারে লা ভিঞ্চি হোটেলের পাশে কাঁচা বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
  সাতক্ষীরার তালায় ধানের ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত, আহত আরও ১১ জন
  চট্টগ্রামে লরির ধাক্কায় তরুণ নিহত, চার ঘণ্টা পর পানির নিচে শিশুর সন্ধান
উপকূলীয় মানুষের পাশে ‘ডু সামথিং’

‘মাজায় আর পারে না বাবা, মনে হয় হাঁটু খুলি য্যাতিস’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘দিনি দু-তিনবার অনেক দূর হাঁটি পানি আনতি হয়। মাজায় আর পারে না বাবা। মনে হয় হাঁটু খুলি য্যাতিস। বাড়ি নি কোন বেটা ছাবাল। বর্ষাকালে যা পানি ধুরি রাখি তা পাত্রের অভাবে রাখতি পারিনি’। কথাগুলো বলছিলেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া রাজিয়া বিবি।

দু’কূলে কেউ নেই রাজিয়া বিবির। সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামে বসবাস করেন তিনি। অসুস্থ জীর্ণ-শীর্ণ শরীর নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার হেঁটে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় তাকে। এটা তার প্রতিদিনের কষ্ট। বর্ষাকালে তা কিছুটা লাঘব হলেও পাত্রের অভাবে পানি সংগ্রহ করে রাখতে পারেন না। পানি সংগ্রহের একটি পাত্র যেন তার কাছে ছিলো আকাশের চাঁদ।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের সহায়তায় সেই চাঁদ যেন হাতে পেলেন রাজিয়া বিবি। পানি সংরক্ষণের জন্য বিনা পয়সায় হাজার লিটারের ট্যাংক পেয়ে তিনি খুশিতে আত্মহারা। চোখেমুখে ছিলো আনন্দের ছাপ।

সুন্দরবন উপকূলের শতাধিক প্রান্তিক পরিবারের মাঝে পানির ট্যাংক বিতরণ করেছে চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ডু সামথিং ফাউন্ডেশন।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবক শাহিন আলম, মাহমুদুল হাসান, বুলবুল, মামুন, মাসুম প্রমুখ সুন্দরবন উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও খুলনার কয়রা পয়েন্টে ১ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১১০টি পানির ট্যাংক বিতরণ করেন।

ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা বলেন, চারদিকে পানি কিন্তু পানযোগ্য পানি নেই। সুন্দরবন তীরবর্তী সাতক্ষীরার মানুষের এই অবস্থা দেখে আমাদের মনে নাড়া দেয়। তাই আমরা এই অসহনীয় কষ্ট থেকে মানুষকে কিছুটা মুক্তি দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নিই। উপকূল তীরবর্তী মানুষের খাবার পানির কষ্ট লাঘবে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে।

সুন্দরবন উপকূলে খাবার পানির সংকট নৈমিত্তিক। তবে, বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যের কারণে এই সংকট বহুগুণ বেড়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে বছরের বড় একটি সময় চলে যায়। অসচ্ছল পরিবারগুলো পাত্রের অভাবে বর্ষা মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করতে পারে না। মাটির কলস, ছোটখাটো পাত্র, কিংবা মাটির গর্তে পলিথিন দিয়ে যৎসামান্য সংরক্ষণ করে রাখে।

উল্লেখ্য, ডু সামথিং ফাউন্ডেশন উপকূলের প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!