খুলনা, বাংলাদেশ | ২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১৬ জুন, ২০২৪

Breaking News

  টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপাকে আয়ারল্যান্ড
  সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত ঈদের ছুটির পর : দুদক আইনজীবী
  সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলেও কথা বলছে না সরকার : ফখরুল
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

কয়রায় সম্পদে শ‌ফি স্বর্ণে মহ‌সি‌ন শিক্ষায় অনাদী এগিয়ে

তরিকুল ইসলাম

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে খুলনার কয়রা উপজেলায় ভোট আগামী ২৯ মে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের ৩ প্রার্থী। তাদের মধ্যে এসএম শফিকুল ইসলামের সম্পদ সবচেয়ে বেশি। আর শিক্ষিত বেশি অনাদী সানা।

কয়রা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন। সবাই স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম মোহসিন রেজা ও আওয়ামী লী‌গের নতুন মুখ অনাদী সানা। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৩৬ জন। গত নির্বাচনে এসএম শফিকুল ইসলাম বি‌দ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগ ম‌নো‌নিত প্রার্থী জিএম মোহসিন রেজাকে পরাজিত করেন।

হলফনামার তথ্য বি‌শ্লেষণ ক‌রে জানা যায়, এসএম শফিকুল ইসলামের অস্থাবর সম্পত্তি কোটি টাকা ছুঁয়েছে। বিগত পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় চার গুণ। তবে স্থাবর সম্পত্তি কমেছে। তার ব্যবসায়িক আয় বেড়েছে দ্বিগুণ। অপরদিকে জিএম মোহসিন রেজার ২০ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। বিগত পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্প‌ত্তি বে‌ড়ে‌ছে প্রায় আট গুণ। বে‌ড়ে‌ছে বাৎসরিক আয়ের পাশাপা‌শি স্থাবর সম্পত্তিও।

হলফনামায় দেখা গেছে, এসএম শফিকুল ইসলাম এইচ,এস,সি পাশ। তার পেশা মৎস্য চাষ ও ঠিকাদারি ব্যবসা। তি‌নি বছরে কৃষিখাত থেকে ৩ লাখ ও ব্যবসাখাত থেকে ২০ লাখ টাকা আয় করেন। তার কাছে নগদ টাকা রয়েছে ৭ লাখ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। ৫ হাজার টাকার মাসিক ডিপিএস রয়েছে। স্বর্ণ রয়েছে নিজের আড়াই ভরি ও স্ত্রীর ৫ ভরি, অর্জনকালীন সময় যার মূল্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এসি, ফ্রিজ, বক্স খাট, আলমারি, টেবিল, চেয়ারসহ অন্যান্য আসবাবপত্র রয়েছে।

যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তার নিজের ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি ও পুত্রের ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল রয়েছে। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার নিজের ৯ একর, স্ত্রীর নামে ১.৩ একর ও তার উপর নির্ভরশীলদের নামে ২ একর কৃষি জমি রয়েছে। যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৩১ লাখ টাকা। মদিনাবাদ মৌজায় ১ বিঘা ৩ শতক জমিতে তার বাড়ি। সেখানে দোতলা একটি ভবন রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ২২ লাখ টাকা। যৌথ মালিকানায় তার সাড়ে চার একর জমি রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য (তার অংশ) ৫ লাখ টাকা।

৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, বিগত পাঁচ বছর আগে এসএম শ‌ফিকুল ইসলা‌মের বছরে আয় ছিল কৃষিখাত থেকে ৩ লাখ, দোকান ভাড়া থেকে ৫০ হাজার ও ব্যবসা থেকে ১০ লাখ টাকা। ওই সময় তার কাছে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ২০ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণ ছিল। ফ্রিজ, টিভি, খাট, আলমারি, টেবিল, চেয়ার ও সোফা ছিল। নিজের একটি মোটরসাইকেল ছিল। তার নিজের নামে কৃষি জমি ছিল ১৫ একর ও অকৃষি জমি ছিল ২৫ শতক। যা অর্জনকালীন সময়ে মূল্য ছিল ২৮ লাখ টাকা। ২৭ লাখ টাকার একটি দোতলা দালান ছিল।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা সূত্রে, জি,এম মোহসিন রেজা এইচ,এস,সি পাশ। তাঁর পেশা কৃষি ও মৎস্য চাষ। তিনি বছরে কৃষিখাত থেকে ২ লাখ টাকা ও ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় করেন। তার কাছে নগদ ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬৭ হাজার ৭২০ টাকা‌। তার স্ত্রীর নামে জমা রয়েছে ৯১ হাজার ১৭০ টাকা। তার নিজের ২০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৮ লাখ টাকা। ফ্রিজ, টিভি, খাট, টেবিল আলমারিসহ অন্যান্য আসবাবপত্র রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৮০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার নিজ নামে কৃষি জমি রয়েছে ৮ একর। অকৃষি জমি রয়েছে সাড়ে ৬ শতক, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৪ লাখ টাকা। যৌথ মালিকানায় অবন্টিত পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে ১৫ একর। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া গোবিন্দপুর গ্রামে একটি বাড়ি রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৮ লাখ টাকা। কয়রা সদরে একটা দোতলা আবাসিক ভবন রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ২০ লাখ টাকা। ২টি মংস্য খামার রয়েছে, আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ টাকা।

৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা সূত্রে, বিগত পাঁচ বছর আগে জিএম ম্হে‌সিন রেজার বাৎসরিক আয় ছিল কৃষিখাত থেকে আয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকা। ওই সময়ে তার কাছে নগদ ২০ হাজার এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২১ টাকা। তার স্ত্রীর ২০ তোলা স্বর্ণ ছিল। ফ্রিজ, টিভি, খাট, টেবিল, আলমারিসহ অন‌্যান‌্য আসবাবপত্র ছিল। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার নিজ নামে কৃষি জমি ছিল ৫.২২ একর, স্ত্রীর নামে ১.৬৭ একর ও কন্যার নামে ১.১৪ একর। অর্জনকালীন যার মূল্য ছিল ৬ লাখ এক হাজার টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে নিজের সাড়ে ৬ শতক ও কন্যার সাড়ে ৪ শতক। একটি বাড়ি ও কয়রা সদরে একটা দোতলা আবাসিক ভবন ছিল।

এদিকে, অনাদী সানা আমাদী ইউনিয়নে হাতিয়ারডাংগা গ্রামের সন্তান। তিনি এবার প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি এল, এল,এম পাশ। তিনি আইন পেশা থেকে বাৎসরিক ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় করেন। তার উপর নির্ভরশীলরা বছরে আয় করেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার কাছে নগদ ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৩০০ টাকা ও তার স্ত্রীর রয়েছে ১ লাখ টাকা। তার নিজ নামে ব্যাংকে রয়েছে ৪ হাজার টাকা। তার স্বর্ণ রয়েছে ৫ ভরি, যা অর্জনকালীন সময়ে আনুমানিক মূল্য তিন লাখ টাকা। ফ্রিজ, টিভি, সিলিং ফ্যান, মোবাইল, খাট, চেয়ার, আলমারিসহ অন্যান্য কিছু আসবাবপত্র রয়েছে, যার অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। তার নিজের ও স্ত্রীর নামে কোন জমি দেখানো হয়নি।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!