খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

মন্দায়ও দেশের অর্থনীতি গতিশীল : প্রধানমন্ত্রী

গেজেট ডেস্ক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বাংলাদেশে পণ্যমূল্য বৃদ্ধিজনিত যে সমস্যা দেখা গিয়েছে, একই সমস্যা সব দেশেই তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, বিশ্ব জুড়ে মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও গতিশীল।ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সোমবার বিকেলে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী আমরা দেখি মুদ্রাস্ফীতি, গ্রেট ব্রিটেন থেকে শুরু করে, আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপ—প্রতিটি জায়গায় কিন্তু ইকোনোমিক রিসেশন। ব্রিটেন তো নিজেরাই ঘোষণা দিয়েছে তাদের ইকোনোমিক রিসেশন চলছে। এই অবস্থায় আমরা এখনও আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে, চলমান আছে। তবে সবার সহযোগিতায় অবশ্যই আমরা এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারব।’

যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে সবার কাছে দোয়াও চান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সবাই দোয়া করেন যেন বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা, সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি যে শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশকে যেন আমরা তার থেকে মুক্ত রাখতে পারি, আমাদের উৎপাদন বাড়িয়ে নিজেদের চেষ্টায়।’

বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারিকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ‘দুর্ভাগ্য’ হিসেবে আখ্যা দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘তবে দুর্ভাগ্য হলো যে, আপনারা জানেন করোনাভাইরাস—এটা সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি করেছে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। করোনাভাইরাস থেকে ঠিক যখন বিশ্ব উত্তরণ ঘটাতে চেষ্টা করছে, ঠিক সেই সময় এলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও স্যাংশন।

‘তার ফলে প্রত্যেকটা জিনিস, যা আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হয়, যেমন: জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, ভূট্টা, ডালসহ বিভিন্ন জিনিস—প্রতিটি জিনিসের মূল্য কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। পরিবহন মূল্য তার থেকে বেশি। তারপরেও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি যতদূর সম্ভব আমাদের দেশের মানুষের যেন কষ্ট না হয়। তার জন্য যথাযথভাবে সেগুলো যেখান থেকে পারছি যত দাম দিয়ে হোক আমরা ক্রয় করার চেষ্টা করছি, ক্রয় করে যাচ্ছি। মানুষের জীবনমান যাতে সহজভাবে চলতে পারে তার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

দেশের প্রান্তিক মানুষের কল্যাণে সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কেউ অবহেলিত থাকবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এখন এদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। বিনা পয়সায় ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। দেশটা এখন বাংলাদেশ, সত্যি বলতে কী উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে করোনা এবং এই যুদ্ধ আর স্যাংশন—এইটা আমাদেরকে অনেকটা সমস্যায় ফেলছে। সেজন্য আমি আহ্বান করেছি সবাইকে যার যেখানে এতটুকু জমি আছে, নিজের খাদ্য নিজের উৎপাদন করতে হবে। নিজের ব্যবস্থা নিজে করতে হবে।’

২০০১ সালে দেশের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারপর অনেক ঘটনা ঘটে যায়। যা হোক, আমরা সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে ২০০৮-এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯-এ সরকার গঠন করে বাংলার জনগণের ভোটের মাধ্যমে আমরা এ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছি।’

টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে অন্তত গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত আছে। আর এই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে আমরা দেশের উন্নয়ন করতে পারছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ ধরে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘শুধু একটি কথা বলব, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করব না। আমরা শান্তি চাই। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে এই নীতি শিখিয়েছেন।

‘আমরা সরকারের আসার পরে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরে আমি বলতে পারি, আমরা কিন্তু সেই নীতিতে অটল থেকে পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। তার শুভ ফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।’

বিশ্ব শান্তিপ্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৩৪ বছর ধরে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী (প্রেরণকারী দেশ) হিসেবে আমাদের অবস্থান করে নিয়েছি।’

সামরিক বাহিনীতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও তার সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের সেনাবাহিনী এখন পিপলস আর্মি। কারণ দুর্যোগে অথবা যে কোনো দুর্ঘটনায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তাদেরকে সহযোগিতা করে যায়। সেজন্য সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!