যশোরের মণিরামপুরে আকবর সানা (৩৬) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে উপজেলার পারখাজুরা সানাপাড়ায় এ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। খরব পেয়ে পুলিশ নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগমকে আটক করেছে।
নিহতের ডান কান দিয়ে রক্ত ঝরছিলো। তার গলায় ওড়না জড়ানো ছিলো। স্বজনদের দাবি পারিবারিক কলহের জেরে রহিমা তার স্বামীকে হত্যা করেছেন।
আকবর সানা ওই গ্রামের আরশাদ সানার ছেলে। তিনি পেশায় ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ী। এ দম্পতির এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে।
স্বজনরা জানান, আকবর পেশায় ফেরিওয়ালা ও বাগেরহাট এলাকায় ভাঙ্গাড়ি কিনতেন। এক-দুই মাস পরপর তিনি বাড়িতে আসতেন। এ সুযোগে আকবরের স্ত্রী রহিমা বেপরোয়া চলাফেরা করতেন। প্রতিবার কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরলে এসব নিয়ে স্ত্রীর সাথে তার কথাকাটাকাটি হতো।
নিহতের চাচাতো ভাই তরিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার আকবর বাড়ি ফিরেছে। অনেক রাত পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। সকালে ফজরের নামাজের জন্য রহিমাকে ডাকতে যান আকবরের বড় ভাবি জোসনা বেগম। তখন অনেক বার দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেও ভিতর থেকে কোনো সাঁড়া মেলেনি। এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে দেখা যায় গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মাটিতে আকবরের মরদেহ পড়ে আছে। পাশে বসে কাঁদছেন তার স্ত্রী।
তরিকুল বলেন, আকবর যদি রাতে কিছু করবেন তাহলে তার স্ত্রীর দেখতে পাওয়ার কথা। তখন রহিমা আমাদের ডাকাডাকি করতে পারতেন। কিন্তু তেমন কিছু করেননি রহিমা। আমরা ধারণা করছি কথাকাটাকাটি এক পর্যায়ে রহিমা আকবরের কানে আঘাত করেছেন। স্বামীর অণ্ডকোষ টিপে তিনি তাকে হত্যা করেছেন। পরে গলায় ওড়না জড়িয়ে দিয়ে ভিন্ন কিছু বুঝাতে চেয়েছেন।
এ বিষয়ে আকবরের স্ত্রী রহিমা খাতুন বলেন, অনেক রাত পর্যন্ত আমাদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। তখন আমি স্বামীকে গলায় ওড়না দিয়ে মরতে বলেছি। এরপর আমার ঘুম এসে যায়। ভোরে উঠে দেখি আমার স্বামীর গলায় ওড়না গিট দেয়া। তার মরদেহ নিচে পড়ে আছে।
রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক বানী ইসরাইল বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পেলে বলা যাচ্ছে না। নিহতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা হেফাজতে নিয়েছি।
মণিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।