যশোরের মণিরামপুর উপজেলার টেংরামারী বাজারে ‘বরকত বেকারি’ নামে একটি পাউরুটির কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাত তিনটার দিকে বেকারিতে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে গ্রামবাসী জানিয়েছে।
খবর পেয়ে রাত চারটার দিকে মণিরামপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু তার আগেই একঘন্টার আগুনে পুরো কারখানাটি পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। এতে বেকারি মালিকের ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বেকারি শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এদিন রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আমরা কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যাই। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাজারের নৈশ প্রহরী তাকে আগুন লাগার খবর দেন।
আগুনের সূত্রপাত নিয়ে উপস্থিত গ্রামবাসীর কোনো মতামত জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তবে বেকারির চুলার আগুন থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন। বেকারির ভেতরে চারটি গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
কারখানার মালিক রাহুল হোসেন বলেন, সোমবার দিনের বেলায় ৮০ হাজার টাকার মালামাল কিনে কারখানায় রাখা ছিল। ক্যাশে ৫৭ হাজার টাকা রাখা ছিলো। বিস্কুট ও কেক তৈরির জন্য কয়েকদিন আগে ৮ লাখ টাকায় একটি ওভেন মেশিন আনা হয়েছে। একটা জেনারেটর, দুটি রুটি তৈরির মেশিনসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে তার কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
টেংরামারী বাজারের নৈশ প্রহরী আবুল হোসেন বলেন, রাত ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে বেকারির টিনের চালে আগুন দেখতে পাই। তখন চিৎকার দিলে সবাই এগিয়ে আসে এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
এদিকে, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সেবাপ্রাপ্তি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। খবর পাওয়ার পরও ফায়ার সার্ভিস দেরি করে আসায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
টেংরামারী বাজার কমিটির সভাপতি শাহ আলম বলেন, রাত সাড়ে তিনটায় খবর পেয়ে আমি ৯৯৯ নম্বরে কল করে আগুন লাগার কথা বলি। তারও আধা ঘণ্টা পরে ফায়ার সার্ভিসের লোক এসেছিলো। অথচ ফায়ার সার্ভিসের অফিস থেকে ঘটনাস্থলে মাত্র ৫/৭ মিনিটের পথ।
মণিরামপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রচন্ড শীত ও গভীররাত হওয়ায় আমাদের টিম প্রস্তুত ছিলো না। খবর পেয়ে সবাইকে প্রস্তুত করে নিয়ে আসতে একটু দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আগুন লাগার সূত্রপাত এখনই অনুমান করা যাচ্ছে না। তবে কাঠের চুলা বা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরতে পারে।
খুলনা গেজেট/এনএম