খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বোরো মৌসুমে ৪০০ হেক্টর জমিতে কমেছে ধানের আবাদ

মণিরামপুরসহ ৫ উপজেলার লাখো মানুষের মরণফাঁদ ভবদহ কোনভাবে সমাধান হচ্ছেনা

এস এম সিদ্দিক,মণিরামপুর

যশোর জেলার মণিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার লাখো মানুষের মরণফাঁদ ভবদহ নিরসনে স্লুইচ গেট দিয়ে সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি নিস্কাশন কার্যক্রমে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করা হলেও কোন সুফল মেলেনি বলে অভিযোগ হাজার-হাজার কৃষকসহ ভূক্তভোগীদের। বরং বিলে পানি না থাকায় গেল বছরের তুলনায় এবার বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ আরও কমে গেছে বলে দাবী সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসের। তাছাড়া ভবদহ সমস্যায় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ গ্রামের লাখো মানুষ পানি বন্দী রয়েছেন। যে কারণে ব্যয় বহুল সেচ প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি বিএডিসি কর্মকর্তারা একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি বিএডিসি’র চেয়ারম্যান, কৃষি সচিব ও খুলনা সেচ বিভাগের প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ভবদহ এলাকা পরিদর্শনকালে স্লুইচ গেটের তলদিয়ে লিকেজের বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় যশোর সার্কিট হাউজে কৃষি মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, ভবদহ তৎসংলগ্ন বিলে ফসল ফলাতে ও পানি বন্দী মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) ও বিএডিসি বাংলাদেশ কষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে চলতি বছরের শুরুতেই এ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

বিএডিসির খুলনা বিভাগীয় প্রধান (সেচ বিভাগ) আব্দুল্লাহ আল রশিদ জানান, ভবদহ অঞ্চলের বিলে ফসল ফলাতে ও মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পাউবো’কে বিএডিসি ৩০ এইচপি (হর্সপাওয়ারের) ২০টি সেচ পাম্প সরবরাহ করা হয়। যা রক্ষণাবেক্ষনে বিএডিসির ৮ জন শ্রমিক নিয়ে একজন উপ-প্রকৌশলী সেখানে সার্বক্ষনিক দেখভাল করে থাকেন। কিন্তু স্লুইচ গেটের তলদিয়ে লিকেজের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তা পাউবো’কে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। জানাযায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিএডিসি’র চেয়ারম্যান ডক্টর অমিতাভ সরকার, কৃষি সচিব মোঃ মেজবাহুল ইসলাম সরেজমিন পরিদর্শনে আসলে লিকেজের বিষয়টি তাদের দৃষ্টি গোচর হয়। ১২ সেপ্টেম্বর যশোর সার্কিট হাউজে কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে এক সভায় পাউবোর’ নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিকেজের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

যপবিস-২-এর ডিজিএম (কারিগরি) আবু হেনা শফি কামাল জানান, পাউবো’র আবেদনের প্রেক্ষিতে সেচ পাম্প কার্যক্রম চালাতে গত ৪ জানুয়ারি ২০টি সংযোগ দেওয়া হয়। পাম্প চালাতে ৭০০ কেভির ট্রান্সফরমার বসাতে কন্সট্রাকশন ব্যয় হয় ৭ লাখ ৬০ হাজার এবং ট্রান্সফরমারের জন্য ব্যয় হয় প্রায় ২৫ লাখ টাকা। পুরো ব্যয় সমিতির পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এছাড়া পাউবো প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকে প্রায় ১৪ লাখ টাকা। মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, গত বোরো মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। কিন্তু এবার ভবদহ সংলগ্ন ৫টি বিলে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ কমে গেছে।

ভবদহ পানি সংগ্রাম কমিটির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল হামিদ বলেন, সম্প্রতি ভবদহ সংলগ্ন ৩০ গ্রামের মানুষের সাথে এক সভা অনুষ্ঠিত হলে উপস্থিত একজনও বলেনি সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি নিস্কাশনে তারা উপকৃত হয়েছেন। পাশ্ববর্তী কুলটিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পরমানন্দ মন্ডল জানান, বাজেকুলটিয়া, হাটগাছা, ডহর মশিয়াহাটি,সুন্দলী, আন্দা, ডুমুরতলা এবং বেবভিটাসহ কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষ ভবদহ সমস্যায় এখনও পর্যন্ত পানি বন্দী রয়েছে।

জানতে চাইলে যশোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, স্লুইচ গেটের তলদিয়ে লিকেজ সমস্যা সমাধানে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!