ভারতে বাংলাদেশি কিশোরী টুম্পা হত্যাকান্ডের মূল আসামি ও পাচারকারী চক্রের দু’সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ৬। শুক্রবার তাদের খুলনা ও যশোরের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হল, আলী হোসেন, মো: আল আমিন ও কুলসুম বেগম।
র্যাব ৬ এর পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, ভিকটিম টুম্পা বাবা-মায়ের সাথে ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি বাসায় বসবাস করত। আসামিরা তাকে টিকটিক সেলিব্রেটি ও বিদেশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে। পাচারকারী চক্রের সদস্য বৃষ্টি এবং নবারের পরিকল্পনায় তাকে ঢাকা থেকে খুলনায় আনা হয়। খুলনায় বৃষ্টির মায়ের বাড়িতে তিনদিন তাকে রাখা হয়। এরপর বৃষ্টি ও নবাবের নির্দেশে মানবপাচার চক্রের সাহায্যে তাকে যশোর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত পাচার করা হয়।
ভারতের একটি বাসায় রেখে তাকে এনআইডি ও আধার কার্ড তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করাত ও জোর পূর্বক আলী হোসেনের সাথে টিকটক ভিডিও বানানো হত। এমনকি তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালত তারা।
পাচারকারী চক্রের সকল গোপন তথ্য টুম্পা জেনে গিয়েছিল। তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দেশে আসার চেষ্টা করে টুম্পা। আলী হোসেন ঘটনাটি জেনে ফেলে। টুম্পার বিষয়টি নবাব ও বৃষ্টিকে জানায় আলী হোসেন। তখন তারা দু’জন টুম্পাকে হত্যার নির্দেশ দেয় আলী হোসেনকে। যেন তাদের গোপন তথ্য কোথাও ফাঁস না হয়।
২৬ জানুয়ারি গুজরাটের পুলিশ নিহত টুম্পার বাবাকে ফোন করে জানায় তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি নম্বর থেকে জানানো হয় আলী হোসেন তার মেয়েকে নিশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা র্যাব বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর থেকেই র্যাব আসামীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং অভিযান অব্যাহত রাখে। র্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত করে।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার র্যাব ৬ স্পেশাল কোম্পানী ও যশোর ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল যশোর ও খুলনায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকারী আলী হোসেন, পাচারকারী চক্রের সদস্য মো: আল আমিন ও কুলসুম বেগমকে গেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ঢাকার ডেমরা থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছিল।
খুলনা গেজেট/ এসজেড