রাত পার হলে কোরবানির ঈদ। এখনও ব্যস্ততা কমেনি খুলনার কামারদের। মাংস কোপানো থেকে শুরু করে রাখা পর্যন্ত প্রয়োজন হয় তেতুল কাঠের খাইট্টা ও হোগলাপাতার পাটি। এগুলো কিনতে হিড়িক পড়েছে নগরীতে। আর এ সুযোগ ব্যবহার করে পকেট ভারী করছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ গেল বছরের তুলনায় এবার বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে।
নগরীর কয়েকটি কামার বাড়ি ঘুরে দেখা গেছে এখনও তারা ছুরি ও চাপাতি ধার দিচ্ছেন। চাপাতি ধার দিতে ১৫০ টাকা, ছোট ছুরি ধার দিতে ৪০ টাকা নিচ্ছেন কামাররা। তেতুল কাঠের খাইট্টা বড় আকৃতির ৪০০ টাকা একটু ছোট হলে সেটি ২০০ টাকা, হোগলা পাতার পাটি ছোটটা ১৫০ টাকা ও বড় আকৃতির ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ গেল বছরে চাপাতি ধার দিতে ১০০ টাকা, ছুরি ২০ টাকা লেগেছে। তেতুল কাঠেল বড় আকৃতির খাইটে ২০০ টাকা ও ছোট আকৃতির খাইটে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। হোগলাপাতার পাটি ছোটটা ৮০ টাকা ও বড় আকৃতির পাটি ১২০ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ইকবাল নগর রোড়ের কামার বাড়ির ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ বলেন, চাপাতি ও ছুরি ধার দিতে যথাক্রমে ১৫০ এবং ২০ টাকা নিচ্ছি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, গেল বছরের তুলনায় এবার কসাইয়ের সংখ্যা কম। তাছাড়া বেড়েছে কয়লার দাম ও বিদ্যুতের দাম। এই টাকা না রাখলে যে না খেয়ে মরতে হবে।
দোলখোলা এলাকার কামার সাইদ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যর দাম ক্রমাগত বেড়েছে। বাড়ির মালিক দোকান ভাড়া ৫০০টাকা বাড়িয়েছে। বছরে কোরবানি একবার হয়। কসাইরা একবার আমাদের কাছে আসে। এ দাম না রাখলে আমাদের পরতা হয় না। তাই এ দাম রাখছি।
নগরবাসির গরু কেনার ব্যস্ততা শেষ হয়েছে। ব্যস্ততা বেড়েছে হোগলাপাতার পাটি ও তেতুল কাঠের খাইট্টা’র। ব্যবসায়ীরা ভ্যানে বা কোথাও বসে বিক্রি করছেন কোরবানির এসকল সামগ্রী। নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে দেখা যায় এগুলো বিক্রির হিড়িক বেড়েছে।
হোগলাপাতা পাটির ব্যবাসয়ী মো: মানিক খা খুলনা গেজেটকে বলেন, সারা বছর তিনি ভ্রাম্যামান দোকনদার হিসেবে পেয়াজ, রসুন ও আদা বিক্রি করেন। অনেক ক্রেতাই এসকল পণ্য আগাম কিনে রেখেছেন। কোরবানি উপলক্ষে তিনি এ ব্যবসা বেছে নিয়েছেন। ১৫০ পিছ হোগলা পাটি নিয়ে ময়লাপোতা মোড়ে বসছেন। গত দু’দিন সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ৮০ টি পাটি বিক্রি করেছেন। সব জিনিষের দাম বেড়েছে। বেশী দামে কিনে এ দামে বিক্রি করছেন তিনি।
পাটি ক্রেতা শামীম খুলনা গেজেটকে বলেন, গেল বছর একই পাটি তিনি ৮০ ও ১২০ টাকায় ক্রয় করেছেন। ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে এগুলো বিক্রি করছেন। আমাদের প্রয়োজন তাই কিনতে হচ্ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।
কাঠের দাম বেড়েছে। তাই কাঠের খাইট্টা’র দাম বেড়েছে। কথাগুলো এক নিশ্বাসে বললেন বিক্রেতা আকবর হোসেন। পেশা তিনি জ্বালানি কাঠের ব্যবসায়ী। ঈদ উপলক্ষে তিনি এ ব্যবসায়ে নেমেছেন। বড় খাইট্টা ৪০০ ও ছেট খাইট্টা ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। কারণ হিসেবে তিনি খুলনা গেজেটকে জানান, গোলার মালিক কাঠের দাম ও খাইট্টা’র দাম বাড়িয়েছেন। সেখান থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনে এ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ক্রেতা শুকুর খুলনা গেজেটকে বলেন, দাম বাড়েনি এমন কোন জিনিষ খুজে পাওয়া যাবেনা। কিন্তু যাদের দেখার প্রয়োজন কিন্তু তারা দেখেনা। প্রয়োজন হয়েছে তাই কিনতে হবে বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএম