খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯০
  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

বৈঠক শেষে কর্মবিরতি বিষয়ে যা বললেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিএমএ নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনায় চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় তৃতীয় দিনের কর্মবিরতি চলছে। দফায় দফায় বৈঠক করেও কোন সমাধান হয়নি। শুক্রবার ( ৩ মার্চ) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি দলের সাথে চিকিৎসকদের বৈঠক শেষে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে চিকিৎসকরা। এর আগে বিকাল ৩টায় বিএমএ ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়।

বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, কর্মসূচি অপরিবর্তিত আছে। কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল শনিবার দুপুরে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ এবং সন্ধ্যা ৭টায় বিএমএ ভবনে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ সভায় আমরা নতুন বা ভিন্ন কর্মসূচি পেতে পারি, সভা শেষে জানানো হবে।

তিনি বলেন, সরকার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অবস্থান থেকে উনারা এসেছেন। আমাদের কর্মবিরতিতে যে রোগীর জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন, সেই রোগী যেন চিকিৎসা পাওয়া থেকে বিরত না থাকে। তাকে যেন সেইরকম চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমরা বলেছি অলরেডি এমনটা চলছে। কোন জরুরী রোগী চিকিৎসা না পেয়ে এখান থেকে যায়নি। হাসপাতালের বহির্বিভাগে এবং অভ্যন্তরে নরমাল রুটিনের যেসকল রোগী তাদের ক্ষেত্রে হয়তো ইফেক্ট পড়ে। কিন্তু কোন জরুরি রোগী যার চিকিৎসা দরকার, তা না হলে তার মৃত্যু ঘটতে পারে এরকম কোন রোগী চিকিৎসা বঞ্চিত হয়নি। আমাদের জরুরি টিম, জরুরি বিভাগ প্রতিনিয়ত সদর হাসপাতাল, আবু নাসের হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। এমনকি থানা হেলথ কমপ্লেক্সগুলোতেও তারা এমার্জেন্সি স্কোয়াডে জরুরি চিকিৎসা বহাল রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, খুলনা বিএমএ’র কর্মবিরতির ফলে কি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ? সেটা দেখা, যে চিকিৎসক লাঞ্চিত হয়েছে তার সাথে কথা বলা এবং আমাদের সাথে যৌথ সভায় উপস্থিত হয়ে তারা এসব কথা বলেছেন। তারা আরও বলেছেন চিকিৎসকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তার বিষয়ে উনারা জানেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবেন এবং অবশ্যই এর একটা ফলাফল পাওয়া যাবে।

বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, আপনারা বলেন যে রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে না। আমাদের রোগির শতভাগ চিকিৎসা হচ্ছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে যে রোগীগুলো ভর্তি আছে তাদের চিকিৎসা শতভাগ হচ্ছে। অপারেশন হচ্ছে। আমাদের চিকিৎসকরা সম্পূর্ণ তাদের কর্মপ্রতিষ্ঠানে আছে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন কর্মরত অবস্থায় আমাদের একজন ডাক্তার আহত হয়েছে। সেই কারণে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক একটাও সেবা বন্ধ নেই। এই সেবার পাশাপাশি আমরা কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ হতে চাই, কিভাবে হতে চাই পরবর্তীতে সেটা জানানো হবে।

কর্মবিরতির বিকল্প কর্মসূচি আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি যদি কাজই করি তাহলে কর্মসূচি কোথায় ? আমি জরুরিতে কাজ করছি, অভ্যন্তরে কাজ করছি, আমি ওটিতে অপারেশন করছি তাহলে কর্মবিরতি কোথায় পাচ্ছেন আপনারা ? তিনি বলেন, আপনারা হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলে নিউজ করবেন, একেক জনের সাথে কথা বলে বিক্ষিপ্ত নিউজ করবেন না।

চিকিৎসকরা জানান, গত ১ মার্চ থেকে কর্মবিরতিতে রয়েছেন তারা। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী বিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি রোগীদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া বিএমএ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন খুলনা বিএমএ নেতাদেরকে ফোন করে একই নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বেলা ১১টায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল চত্বরে যে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কর্মসূচি ছিল তা বাতিল করা হয়। বেলা ১১টায় খুলনা বিএমএ কার্যালয়ে জরুরি সভা করেন চিকিৎসকরা। তবে ঊর্ধ্বতনদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে নির্দেশ থাকলেও প্রায় ৪ ঘণ্টার সভায় কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই সভা শেষে খুলনার বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলাকারী পুলিশের এএসআই নাঈমকে গ্রেপ্তার এবং দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!