বৃষ্টির আগের বাংলাদেশ আর বৃষ্টির পরের বাংলাদেশ যেন এক ভিন্ন দল। বৃষ্টির পূর্ব পর্যন্ত ম্যাচে বেশ আধিপত্য বিস্তার করেই খেলছিল টাইগাররা। তবে, বৃষ্টির পরে বদলে গেল সেই চিত্র। দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন হয়ে গেল দিশেহারা। লিটন দাসের বিদায়ের পর বাকি ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে শেষ পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে ৫ রানের পরাজয়বরণ করতে হলো বাংলাদেশকে। এ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে ভারত।
ভারতের দেয়া ১৮৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের জন্য নতুন টার্গেট নির্ধারণ করা হয়। ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে দেয় হয় ১৫১ রানের লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু বাংলাদেশ নির্ধারিত ১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৫ রান। এই পরাজয়ের ফলে সেমিফাইনালে পা রাখার সম্ভাবনা আর রইল না বাংলাদেশের।
বুধবার (২ নভেম্বর) অ্যাডিলেডের ওভারে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ম্যাচটি শুরু হয়। ম্যাচটি সরাসরি দেখাচ্ছে টি-স্পোর্টস ও গাজি টিভি।
এর আগে ভারতের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে লিটনের দাসের ঝড়ো ফিফটিতে বাংলাদেশ ৭ ওভারেই তুলে নিয়েছে ৬৬ রান। ২৬ বলে ৩ ছয় ও ৭ চারে লিটন করেন ৫৯ রান। এরপরই মাঠে আঘাত হানে বেরসিক বৃষ্টি। বৃষ্টি আইনে সেসময় বাংলাদেশ ১৭ রান বেশি করে এগিয়ে ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ওভালে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। চার পেসার নিয়ে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরুটা খারাপ করেনি। দলীয় ১১ রানে হাসান মাহমুদের বলে ২ রান করে রাব্বির হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রোহিত শর্মা। শুরুতেই উইকেট নিয়ে ভারতকে কিছুটা চাপে ফেললেও সেই চাপ সামলিয়ে উঠে ভারত। বিরাট কোহলি এবং রাহুল দুইজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ম্যাচে ফিরে ভারত।
চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ও ক্যারিয়ারের একুশতম ফিফটি হাঁকিয়ে সাকিবের বলে মোস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রাহুল। রাহুলের বিদায়ের পর ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন সূর্য। মাত্র ১৬ বলে তিনি করেন ৩০ রান। সূর্যের সেই ইনিংসকে বড় হতে দেননি সাকিব। দলীয় ১১৬ রানে সাকিবের বলে সূর্য আউট হলে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত। সূর্য ও রাহুল বিদায় নিলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন বিশ্বকাপে ফর্মে থাকা বিরাট কোহলি।
হার্দিক পান্ডিয়া এবং দীনেশ কার্তিক ব্যাট হাতে তেমন বড় স্কোর করতে না পারলেও ভারতের পক্ষে শেষ পর্যন্ত একা লড়ে যান কোহলি। কোহলির ৪৪ বলে ৬৪ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান করে ভারত। বিশ্বকাপের চলতি আসরে এটি ছিল কোহলির তৃতীয় অর্ধশত রানের ইনিংস। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এটি ৩৬তম হাফসেঞ্চুরি।
বাংলাদেশের পক্ষে খরুচে বোলিং করে হাসান মাহমুদ শিকার করেন তিন উইকেট, এছাড়া সাকিব পেয়েছেন দুইটি। তবে বল হাতে সবচেয়ে নিষ্প্রভ ছিল শরিফুল। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৫৭ রান।