রাজস্থান রয়্যালসকে চলতি আইপিএলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সঞ্জু স্যামসন। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের সুবাদে তিনি ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। তবে গতকাল তার বিধ্বংসী ইনিংসে কাজ হয়নি রাজস্থানের। উল্টো ৪৬ বলে ৮৬ রান করা অবস্থায় ক্যাচ আউট হয়ে ফিরেছেন, যা নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। মাঠেই ওই আউট নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন স্যামসন, যার জন্য এবার তাকে শাস্তির মুখে পড়তে হলো।
দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে গতকাল (মঙ্গলবার) অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সফরকারী হয়ে নেমেছিল রাজস্থান। যেখানে আগে ব্যাট করে দিল্লি নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করে। সেই রান তাড়ায় পাল্টা বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসন। তবে তার ৪৬ বলে ৮৬ রানের ইনিংস শেষ পর্যন্ত বৃথা গেল। আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে না পারায় রাজস্থান ২০১ রানে থামে। চায়নাম্যান স্পিনার কুলদীপ যাদবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২০ রানের জয় পেয়েছে দিল্লি।
এর আগে মুকেশ কুমারের বলে স্যামসন আউট হন বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে। শাই হোপ সেই ক্যাচটি ধরার সময় তার পা সীমানা দড়িতে লেগেছে বলে দাবি তোলেন স্যামসন। এই কারণে তিনি মাঠের আম্পায়ারদের সঙ্গে কিছুক্ষণ তর্ক করার পর রিভিউ নিতে চেয়েছিলেন। তবে মাঠের আম্পায়াররা স্যামসনের কথা শোনেননি। কারণ তাকে আউট দিয়েছিলেন ম্যাচের তৃতীয় আম্পায়ার। সেই কারণে আম্পায়াররা রাজস্থান দলপতির কথা মানেননি এবং এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে তর্ক বাড়তে থাকে। পরে অবশ্য এ নিয়ে সর্বত্র বিতর্ক দেখা দেয়। যা নিয়ে শেষ পর্যন্ত সঞ্জু স্যামসনকে জরিমানা করল বিসিসিআই।
স্যামসনকে তার ম্যাচ ফি’র ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে, এই অর্থ তাকে বোর্ডের কাছে জমা দিতে হবে। জানা গেছে, রাজস্থান অধিনায়ক আইপিএলের কোড অফ কন্ডাক্টের ধারা ২.৮–এর অধীনে লেভেল ১ অপরাধ করেছেন। তিনি দোষ স্বীকার করেছেন এবং ম্যাচ রেফারির অনুমোদন গ্রহণ করেছেন। তবে আচরণবিধির লেভেল ১ লঙ্ঘনের জন্য ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং বাধ্যতামূলক। এমন অবস্থায় এ বিষয়ে এখন আর কোনো শুনানিও হবে না।
স্যামসন যখন আউট হয়ে ফিরছেন, তখন রাজস্থানের জয়ের জন্য ২৭ বলে আর ৬০ রান দরকার। পরে শেষ ৩ ওভারে দলটি কেবল ২০ রান তুলতে সক্ষম হয়। মূলত তাদের এমন পরাজয়ের জন্য স্যামসনের আউটটিকে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট মনে করা হচ্ছে। তবে এমন আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়া থার্ড আম্পায়ারের জন্যও কঠিন বলে জানান রাজস্থান কোচ কুমার সাঙ্গাকারা, ‘এটি আসলে রিপ্লে ও ক্যামেরা অ্যাঙ্গলের ওপর নির্ভর করে এবং কখনও কখনও আপনার মনে হতে পারে পা সীমানা দড়িতে লেগেছে। তবে এমন অবস্থায় আসলেই থার্ড আম্পায়ারের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। ম্যাচও তখন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ছিল, কিন্তু ক্রিকেটে এমনটা হয়েই থাকে।’
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে দিল্লির সহকারী কোচ প্রবিন আমরে বলেন, ‘আইপিএলে এমন মুহূর্ত খুবই ক্রুসিয়াল এবং হোপের ক্যাচটি ম্যাচের ফলেও চূড়ান্ত ভূমিকা রেখেছে। সঞ্জু খুব ভালো ব্যাটিং করছিল, তাকে ফেরানোয় আমাদের অবশ্যই হোপকে কৃতিত্ব দিতে হবে। এখানে আম্পায়ার আছেন, অনেকরকম প্রযুক্তিও আছে। থার্ড আম্পায়ার আউট দেওয়ার বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। আমাদেরও মনে হয়েছিল তার পা বাউন্ডারিতে স্পর্শ হয়েছে, তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’
খুলনা গেজেট/এনএম