খুলনা, বাংলাদেশ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৫
  ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে : ড. মঈন খান
প্রতি‌রো‌ধে খুলনায় পৃথক সভা

বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট কয়েকগুণ বেশি সংক্রামক

নিজস্ব প্রতিবেদক 

খুলনা বিভাগে ক্রমাগত বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ১০ জুন পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলার ১৬২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে মারা গেছে ২ জন।

সোমবার (১৬ জুন) খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে এবং কেসিসির শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে ‘ডেঙ্গু এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক পৃথক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

বিকালে কেসিসিতে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে কেসিসির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার বলেন, নাগরিকদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় সিটি কর্পোরেশনকে সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু ও কোভিড বিষয়ক কমিটিকে সক্রিয় করতে হবে। উপযুক্ত স্থানে লার্ভিসাইট ও এডালটিসাইট স্প্রে নিশ্চিত করা অবশ্যক। প্রয়োজনে রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় কর্মরতদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানা যেতে পারে। ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুতে উচ্চ ঝুঁকির ওয়ার্ডগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।

সভায় জানানো হয়, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সংক্রামক। করোনা প্রতিরোধে নাগরিকদের নিয়মিত মাস্ক পরা, যথাসম্ভব জনসমাগম পরিহার করা, বাইরে থেকে ফিরে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধোয়া ও অপরিষ্কার হাত নাকে মুখে না দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একই সাথে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থদের সংম্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হবে।

সভায় কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, সচিব শরীফ আসিফ রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (চলিত দায়িত্ব) মশিউজ্জামান খান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা, প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা কোহিনুর জাহান, খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এর আগে আজ দুপুরে বিভাগীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও কেসিসির প্রশাসক মো. ফিরোজ সরকার বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত কমিটিগুলো সক্রিয় করতে হবে। হাসপাতালগুলোর সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বেডগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সবাইকে সচেতন করতে হবে। এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গণমাধ্যমে এবিষয়ক প্রচারে গুরুত্ব দিতে হবে।

 

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। এবিষয়ে সকল দপ্তরকে অবহিত করতে হবে। বাইরে বের হলেই সকলকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। বাড়ির চারপাশ, ড্রেনসহ সকল জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এ বিষয়ে অবহিত করা হবে।

সভায় জানানো হয়, ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, উচ্চ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, পেশী অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, বমি বমি ভাব ও বমি, ত্বক লালচে ফুসকুড়ি, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা ইত্যাদি। ডেঙ্গু রোগ থেকে রক্ষা পেতে দিনে ও রাতে বিশ্রামের সময় মশারি ব্যবহার করা ও শরীরে মশা প্রতিরোধোক লোশন ও স্প্রে লাগানো যেতে পারে। হালকা রঙের পোশাক পরা এবং শরীর ঢাকা পোশাক পরলে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়া বাড়ির ফুলের টব, ফ্রিজে জমা পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাব/নারিকেলের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল ও আশে পাশে পড়ে থাকা পাত্রে জমে থাকা পানি তিন দিনের মধ্যে ফেলে দিতে হবে। বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

সভায় আরও জানানো হয়, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টন লক্ষণসমূহ: জয়েন্টেব্যাথা, মাথাব্যাথা, গলাব্যাথা, পিঠেব্যাথা, নিউমোনিয়া ও ক্ষুধা হ্রাস। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসমাগম এড়িয়ে চলা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। হাচি বা কাশির সময় টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা, ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে (কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড) হাত ধুতে হবে কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

খুলনা স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) দেবপ্রসাদ পাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম মাসুদ, বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ আবু শাহিন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, পরিচালক, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু সম্পর্কে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. অপর্ণা বিশ্বাস এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সহকারী পরিচালক ডা. এস এম শাহরিয়ার।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!