খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৬ মে, ২০২৪

Breaking News

  ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ স্বতন্ত্র সব পরিচালকের পদত্যাগ
  মিল্টন সমাদ্দারের প্রতারণায় সহযোগী ছিলেন তার স্ত্রী : ডিবি প্রধান
  জনগণের ভরসাস্থল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেনাবাহিনী : প্রধানমন্ত্রী

বাজারে ‘মিনিকেট’ প্রতারণা, ঠকছে ক্রেতারা

সাগর জাহিদুল

বাজারে ‘মিনিকেট’ চাল সয়লাব হলেও কাগজ কলমে এর কোন অস্তিত্ব নেই । কোন জাতের ধান থেকে এ চাল উৎপাদন করা হচ্ছে তার সঠিক উত্তর খুলনার ব্যবসায়ীরা দিতে পারেনি। জানা গেছে, মোটা চাল মেশিনে কেটে চিকন করা হচ্ছে। ফলে চালের গুণগত মান কমে যাচ্ছে। ‘মিনিকেট’ চাল কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা।

খুলনায় ধান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বিগত ২০ বছর আগে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে জিরা নামে একটি ধানের বীজ আমাদের দেশে আসে। সে বীজ থেকে যে ধান উৎপাদন করে চাল তৈরি করা হতো সেটি মূলত মিনিকেট চাল নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এ ধান আমাদের দেশে উৎপাদন হয় না। মূলত মোটা ইরি চালকে কেটে মিনিকেট হিসেবে বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।

বড় বজারের চাল ব্যবসায়ী কুন্ডু এন্টারপ্রাইজের মালিক বাসুদেব কুন্ডু খুলনা গেজেটকে বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন হচ্ছে। কোন জাত থেকে মূলত মিনিকেট চালের উৎপাদন করা হচ্ছে তা তিনি বলতে পারেনি। তবে ইরি ৬৩ বা ইরি ৫১ জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চালকে মিনিকেট চাল বলে বাজারে সরবরাহ করছেন মিল মালিকরা।

একই বাজারে কথা হয় নাটোরের চাল ব্যবসায়ী মো: ইউনুছ আলী পিন্টুর সাথে। তিনি বলেন, মিনিকেট বলতে কোন চালের অস্তিত্ব দেশে নেই। চিকন ধান থেকে উৎপাদিত চালকে মূলত মিনিকেট চাল বলে ক্রেতাদের কাছে চাপিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ২০ বছর আগে ভারত থেকে একটি ধানের বীজ আমাদের দেশে আসে। ওই ধান থেকে মিলমালিকরা মিনিকেট চাল উৎপাদন করত। তবে ধানের সে বীজ মিকচার হতে হতে এর গুণাগুন নষ্ট হয়ে গেছে। ওই বীজ এখন আর আসে না। চিকন ধান হলেই মিনিকেট বলে চালিয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। আর একটু খাট হলেই মোটা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।

দিনাজপুর ভান্ডারের মালিক মো: ফারুখ হোসেন বলেন, এলসি থেকে যে চাল আসত, তার বস্তায় মিনিকিট লেখা থাকতো। মিনিকেট কি না তিনি সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। মিনিকেট ধানের বীজ মূলত আমাদের দেশে হয় না। ভারতে উৎপাদন হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: হাফিজুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, আমাদের দেশে মিনিকেট জাতের কোন ধান হয় না। চাল কল মেশিনের ম্যাধমে সেগুলো ছেটে চিকন করা হয়। আর চিকন চালগুলো মিনিকেট বলে চালানো হয়। এগুলো ব্যবসায়ীদের কারিসাজি।

তবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের এ কারিসাজি ঠেকাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যে জাতের ধানের চাল তার নাম বলে বিক্রি করা না হলে শাস্তির বিধানের ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে গত বছর ২০ ডিসেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, ‘অরিজিনালি মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। সরু মিনিকেটের ক্ষেত্রে জিরাশাইল, শম্পাকাটারি এই দুই রকমের ধানটাই বেশি। এমনকি নাজিরশাইল নামে কোনো ধান নেই।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা লিখুন- এই সাদা চকচকে চালে কোনো পুষ্টি নেই। লাল চাল খান।’

 

 

খুলনা গেজেট/ আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!