খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১ মে, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতি অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন
  স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হবে
  সারাদেশে নানা কর্মসূচিতে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস

বাংলাদেশে এসে বাকি জীবন কাটাতে চান কবীর সুমন

বিনোদন ডেস্ক

বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী কবীর সুমন। পশ্চিমবঙ্গে বাস করলেও দুই বাংলাতেই তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তবে নিজের মাতৃভূমিতে না কি ভালো নেই তিনি। আবেগঘন এক পোস্টে এমন কথা জানিয়ে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন কবীর সুমন।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে দীর্ঘ পোস্ট দিয়ে এ ইচ্ছার কথা জানান তিনি। কবীর সুমনের দীর্ঘ সেই স্ট্যাটাস পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

তিনি লিখেছেন, এই কথা আমি আগেও অনেকবার বলেছি। তাও ফের বলছি কারণ আমার কথায় কোনো কাজ হচ্ছে না। এমন নয়, সনাতনধর্মীয় নামধারী কোনো বঙ্গজ আমায় সম্মান করেন না। মুষ্টিমেয় কিছু বঙ্গজ করেন। কিন্তু বড্ড বেশি সংখ্যক সনাতনধর্মীয় বঙ্গজ আমায় ঢাক পিটিয়ে ঘৃণা করেন এবং তা জাহির করে সনাতনী সুখ পান। আর এক শ্রেণির সনাতন-বঙ্গজ আছে যারা আমায় কবীর নামে ডাকতে চায় না। এরা, যা দেখেছি ‌‘বামপন্থি’। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আমার নাম ভারতের সংবিধান মোতাবেক, ঘোষিতভাবে কবীর সুমন। ফার্স্ট নেম কবীর। সার্নেম সুমন।

আমার আয়কর ফাইল, র‍্যাশন কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, আধার কার্ড সর্বত্র এই নামটাই আছে। এই নামে আমি ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে মাননীয় সিপিআইএম সদস্য ডক্টর সুজন চক্রবর্তীকে হারিয়ে দিয়ে লোকসভার সংসদ সদস্য হয়েছিলাম। ভারতের অন্তর্ভুক্ত পশ্চিম বাংলায় তা সবার জানার কথা। তা সত্ত্বেও সিপিআইএম করা বঙ্গজরা আমায় আমার বর্জিত নামে ডাকেন। শুধরে দিলেও শুধরে নেন না। আর নকশালপন্থি দলের বঙ্গজ নেতাও (নামে সনাতনধর্মীয়) আমায় ভুলেও কবীর সুমন বলেন না, কবীর তো নয়ই। তিনি অবিরাম সুমন সুমন করে যান। এদিকে সবারই নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকার বলতে গদগদ। আর একদল আছে, যারা আমায় গানওলা বলে ডাকে। কী বলি।

যা বুঝেছি, আমায় নির্দ্বিধায় সম্মান করেন যারা, প্রাপ্য সম্মানটুকু দেন যারা তারা সদলবলে বাংলাদেশের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের মতো বাংলাদেশের কেউ আমায় সমানে, যে কোনো উপায়ে অপমান করে যান না।

আর মাসখানেক পরে আমি ৭৫ পুরো করে ৭৬-এ পড়ব। কলকাতা আমার প্রথম প্রেম। কলকাতা নামটা আমার গানে যতবার এসেছে আর কারোর কবিতায়-গানে তা আসেনি। আমায় যারা বাঁচিয়ে রেখেছেন তারা সবাই কলকাতার সনাতনধর্মীয় বঙ্গজ। তাদের ছেড়ে থাকতে পারব না। কিন্তু, কারোর কোনো ক্ষতি না করা সত্ত্বেও সমানে অপমানিত হতে হতে এবারে আমি চাইছি এই দেশটা, মায় এই শহরটাও ছেড়ে চলে যেতে। এখানকার সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের মধ্যে অন্তত দুজন ফেসবুকে ঘোষণাও করেছেন ‘হাসপাতাল থেকে ফিরে না এলেই ভালো হতো’। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু লেখেনি।

আমার শেষ জীবন আমি যদি বাংলাদেশে থেকে আমার মাভাষার সেবা করতে পারতাম, বাংলা খেয়াল শেখাতে পারতাম আমার আজকের স্বাস্থ্য যতটা অনুমতি দেবে ততটা অন্তত। আমি এগনোস্টিক (অজ্ঞেয়বাদী)। মরে যাওয়ার পর কোনো ধর্মীয় শেষকৃত্যের প্রশ্নই উঠবে না। আমার দেহ দান করা আছে। বাংলাদেশে মরলে সেখানকার কোনো হাসপাতালে আমার শরীর কাজে লাগানো যেতে পারে।

আজও আমি ফেসবুকে আমার সম্পর্কে সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের খিস্তি পড়েছি। এতে আমার মধ্যে কোনো উত্তেজনা জাগেনি। জাগছে এই ‘বিদেশটা’ ত্যাগ করে ভাষা মতিনের দেশে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া, সেই দেশের কাজে লাগার ইচ্ছে। প্রকাশ্যে সাহায্য ও আশ্রয় চাইছি।

এই রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলা খেয়ালকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, রাজ্য ক্লাসিকাল মিউজিক কনফারেন্সে আমায় বাংলা খেয়াল গাইতে দিয়েছেন। এ রাজ্যের একজন শিল্পীও কিন্তু সংহতি জানাননি আমার সঙ্গে। যতদিন বেঁচে থাকব শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব, তার পক্ষে থাকব। কেউ যদি পারেন আমায় সাহায্য করুন। জয় বাংলা, জয় বাংলা খেয়াল!

খুলনা গেজেট/ এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!