জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন খুলনা আয়োজিত এবং বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লীগের দু’টি ম্যাচই অমিমাংসীত ভাবে শেষ হয়েছে।
শনিবার (৬ আগস্ট) জেলা স্টেডিয়ামে দু’টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর আড়াইটায় দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় শেখ কামাল স্মৃতি সংসদ বনাম সাবেক খেলোয়াড় সংঘ। ম্যাচটি গোলশুণ্যে ভাবে শেষ হয়। অপর দিকে বিকেল সোয়া ৪টায় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব ও টাউন ক্লাব। এ ম্যাচটি ১-১ গোলে অমিমাংসীত ভাবে শেষ হয়।
দিনের প্রথম ম্যাচে শেখ কামাল স্মৃতি সংসদ আগের দু’টি খেলায় জয় নিয়ে মাঠে নামে। পক্ষান্তরে সাবেক খেলোয়াড় সংঘ ৩ খেলায় ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠে নামে। সুন্দর খেলা উপহার দিয়েও জয় থেকে বঞ্চিত হয় শেখ কামাল। এছাড়া সহজ গোলও তারা মিস করে। শক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়ে থেকে খেলা শুরু করে শেখ কামাল। শুরুতেই উভয় দল আক্রমণে যায়। তবে খেলোয়াড় সংঘের থেকে আক্রমণে অনেক এগিয়ে থাকে শেখ কামাল। মাঝেমধ্যে খেলোয়াড় সংঘ আক্রমণে আসলেও তা ব্যর্থ করে দেয় শেখ কামালের রক্ষণভাগ। গোলশুণ্যে ভাবে বিরতীতে যায় উভয় দল। বিরতী থেকে ফিরে উভয় দলই আক্রমন-পাল্টা আক্রমন করতে থাকে। তবে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে শেখ কামাল। এসময় তারা কয়েকটি সহজ গোল মিস করে। আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়দের ব্যর্থতায় এদিন পয়েন্ট ভাগাভাগি করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে শেখ কামাল স্মৃতি সংসদকে।
খেলাটি পরিচালনা করেন রেফারী আব্দুর রহমান ঢালী, পারভেজ আলম, তৌহিদ হোসেন ও কামরুল আযম বাবু। ম্যাচ কমিশনার ছিলেন শহিদুল ইসলাম লালু।
দিনের দ্বিতীয় খেলায় শক্তিশালী মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের প্রতিপক্ষ ছিল টাউন ক্লাব। খেলাটি উপভোগ করল খুলনার দর্শকরা। মন মাতানো এ খেলায় ছিল আক্রমন-পাল্টা আক্রমন। উভয় দলই জয়ের নেশায় মরিয়া হয়ে ওঠে। মাঠে নামার আগে প্রতিপক্ষের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল মোহামেডান। তারা বলাকা, ইয়ং রেডসান ও ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারিয়ে পুর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে মাঠে নামে। পক্ষান্তরে টাউন হেরে যায় আবাহনী ও উইনার্সের সঙ্গে। মহেশ্বরপাশার সঙ্গে ড্র করে তাদের ঝুলিয়ে ১ পয়েন্ট। এদিন জয় কিংবা ড্র’র প্রয়োজন ছিল টাউন ক্লাবের। গোলশুণ্যে ভাবে বিরতীতে যায় উভয় দল। বিরতী থেকে ফিরে উভয় দলই আক্রমন-পাল্টা আক্রমন করতে থাকে। তবে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে মোহামেডান। একের পর এক আক্রমন করতে থাকে তারা। তাতে ফলও পায়। ৬২ মিনিটের সময় টাউন ক্লাবের খেলোয়াড়রা অফসাইড এর ফাঁদে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই ফাঁদে পড়ে যায়। ডানপ্রাপ্ত থেকে বল ছোট ডি বক্সের মধ্যে মাইনাস করলে দলের ১০নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সৌরভ গোলকিপারকে পরাস্ত করেন (১-০)। পিছিয়ে পড়ে গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে টাউন ক্লাব। তারাও আক্রমনের পর আক্রমন করতে থাকে। এসময় তারা সহজ দু’টি গোল মিস করে। কিন্তু তাতেও তাদের মনবল ভেঙ্গে পড়েনি। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে খেলতে থাকে তারা। ৭৬ মিনিটের সময় বামপ্রাপ্ত থেকে বল ছোট ডি বক্সের মধ্যে উঁচু করে ফেললে বল ক্লিয়ার করার জন্য জটলার সৃষ্টি হয়। সে সময় টাউন ক্লাবের ৪নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সুচতুর ওসমান তীব্র সর্টে বল জালে পাঠান (১-১)। শেষ মুহুর্তে গোল হজম করে কিছুটা ব্যকফুটে চলে যায় মোহামেডান। খেলার বাকি সময়ে উভয় দল এগিয়ে যাওয়ার লড়াই চালিয়ে গেলেও তাতে কোন ফল আসেনি। ১-১ গোলের সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে দু’দলকে। খেলাটি পরিচালনা করেন রেফারী কামাল আহমেদ, মোশাররফ হোসেন, মোক্তার হোসেন মিঠু ও সাইফুল ইসলাম। ম্যাচ কমিশনার ছিলেন মঈনুল ইসলাম। খেলা দু’টির ধারাভাষ্য ছিলেন এডভোকেট এম এম সাজ্জাদ আলী ও এডভোকেট প্রজেশ রায়।
মাঠে উপস্থিত ছিলেন জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মোতালেব মিয়া, ডিএফএ সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী, কোষাধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম খান কালু, কার্যনির্বাহী সদস্য ও লীগ কমিটির সম্পাদক সুজন আহমেদ ও সদস্য ও লীগ কমিটির সহ-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মহসীন। ৭ আগস্ট রবিবার জেলা স্টেডিয়ামে দু’টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর আড়াইটায় দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে মহেশ্বরপাশা ক্লাব বনাম বলাকা স্পোটিং ক্লাব। বিকেল সোয়া ৪টায় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে খুলনা আবাহনী ক্রীড়া চক্র ও ইয়ং রেডসান ক্লাব।