খুলনার ফুলতলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত মোল্যা হেমায়েত হোসেন লিপু’র হত্যার ঘটনায় তার ভাই মোল্যা হেদায়েত হোসেন লিটু বাদি হয়ে এজাহার নামীয় ৮জন সহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামী করে মামলা করেছেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামী চরমপন্থী নেতা ফারুক মোল্যাসহ দু’জনকে আটক করেছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ফুলতলার গরুহাট এলাকায় সন্ত্রসাীদের গুলিতে নিহত লিপুর ভাই ও ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্যা হেদায়েত হোসেন লিটু বাদি হয়ে মামলা (নং-১৪, তারিখ-১৯/১২/২০২০ইং) দায়ের করেন। মামলায় বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা ও বাহিনীর প্রধান ফারুক মোল্যাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। ঐ রাতেই পুলিশ ফুলতলার পয়গ্রামের একটা বাড়ি থেকে ফারুক মোল্যা (৪৫) ও তার সহযোগী কালিয়া থানার সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত আবু বক্কার শেখের পুত্র মুরাদ হোসেন শেখ (৪০) কে আটক করে। আটকদ্বয়কে শনিবার আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
ওসি মাহাতাব উদ্দিন বলেন, অবৈধ অর্থের ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৩ টি গুলির খোসা, ১টি মোবাইল সেট ও ১টি চশমা উদ্ধার করে। গুলিতে নিহত হেমায়েত হোসেন লিপুর বুকে, তলপেটে ঝাঝরা এবং কপাল ও মুখ ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানিয়েছেন। মামলার অন্যান্য আসামীদের হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গেল শুক্রবার মোল্যা হেমায়েত হোসেন লিপু তার বাড়ির অদূরে ফুলতলা গরুহাট এলাকায় হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে ও অফিসের বাইরে দাড়িয়ে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে আড্ডা ও টিভি দেখছিলেন। এ সময় মোটর সাইকেল যোগে মুখোশধারী ৪/৫ জন অস্ত্রধারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই লিপুর বুকে ও মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি বর্ষণ করে। সাথে সাথে লিপু মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে তার মৃত্যু হয়।
মোল্যা হেমায়েত হোসেন লিপু ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্যা হেদায়েত হোসেন লিটুর ছোট ভাই। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী দল (বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টি) তালিকাভূক্ত থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাধারণ ক্ষমা ও আত্ম সমার্পনের সুযোগ নিয়ে দু’বছর পূর্বে পাবনাতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হাতে অস্ত্র জমা দেয়। সরকারের আর্থিক অনুদান নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। গত ঈদুল ফিতরে ঈদ উদযাপনের জন্য ফুলতলা উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও খুলনার পুলিশ সুপার এস এস শফিউল্লাহ’র উপস্থিতিতে লিপুসহ আত্ম সমার্পণকৃত ৩২ সদস্যকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
খুলনা গেজেট/এমএম/কেএম