“প্রথমে খুটিতে বেঁধে পিটিয়েছে। আমার মেয়ে ওদের পা ধরেছে, ছাড়েনি। মারির কথা কি বলবো, পৃথিবীতে এমন মার আর হতি পারে না। বাড়ির ভিতরে প্রথমে হাতুর দিয়ে তল পেটে, মাথায় সমস্ত জায়গায় পিটিয়েছে। এরকম মার কোথায়ও দেখিনি। তারপর টেনে টেনে নিয়ে রাস্তায় গাছের সাথে বেঁধে আবার পিটিয়েছে। হিংস্র পশুর মতো পিটিয়েছে আর কামরিয়েছে। আমরা কিছুই করতে পারেনি, শুধু দেখেছি।” আহত শামিমা নাসরীনের অসহায় বাবা গফ্ফার গাজী কেঁদে কেঁদে এভাবে বলছিলেন সেই ভয়াবহ দিনের কথা।
তিনি খুলনা গেজেটকে আরও বলেন, “পৈত্রিক সম্পত্তির বসত বাড়ির উপর ঘর বাঁধাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী লিয়াকত গাজী, সাখাওয়াত গাজী ও নুর আলম গাজীর হুকুমে ঐ পরিবারের সবাই এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের উপর। এলাকার মানুষ যারা বাঁধা দিয়েছিলো তাদেরকেও মারছে, তাই আর কেউ এগিয়ে আসার সাহস পাইনি। মেয়েটাকে মারতে মারতে বিবস্ত্র করে ফেলেছে, তবুও ছাড়েনি। পুলিশ না এলে মেয়েটাকে মেরে ফেলতো, কারোর কিছু করার ছিল না “
উল্লেখ্য, ঘটনার ৪ দিন পরে ভিকটিমের পিতা আব্দুল গফফার গাজী বাদী হয়ে শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাতে ১৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে কয়রা থানা পুলিশ অভিযানে নামে এবং ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
কয়রায় সন্তানদের সামনে মাকে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় নির্যাতন (ভিডিও)
এর আগে ঈদের পরের দিন সোমবার ( ১১ জুলাই) সকালে প্রতিপক্ষ জোরপূর্বক আব্দুল গফফার গাজীর জমিতে ঘর নির্মাণ করতে চায়। এসময় তার মেয়ে শামিমা নাসরিন ও পুত্রবধূ সালমা খাতুন ঘর নির্মাণে বাধা দেন। তখন প্রতিপক্ষ শামীমাকে বাড়ির ভেতর থেকে বের করে দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করে। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। বর্তমানে আহত শামিমা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গাছে বেঁধে নারীকে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের মামলায় আসামি ১৪, আটক নেই
খুলনা গেজেট/ এস আই