খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৬ মে, ২০২৪

Breaking News

স্কপ খুলনা জেলার প্রতিনিধি সভা

পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ৯ দফা দাবি পেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) প্রতিনিধি সভা গতকাল শুক্রবার বিকালে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্কপের যুগ্ম আহবায়ক খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিক নেতা ফারুক-উল-ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় শিল্প-শ্রমিক রক্ষা ও জাতীয় অর্থনীতি বিকাশে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ শ্রমিকদের আশু ও দীর্ঘমেয়াদী ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়।

দাবিগুলো হচ্ছে-
১. জাতীয় স্বার্থ বিরোধী পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। পাটকল আধুনিকায়ন করা।
২. শ্রমিক প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে চিনিকলসমূহ আধুনিকায়ন কর। লুটপাট ও ধ্বংসের হাত থেকে ব্যাংক, বিমান, রেলসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ রক্ষা করা।
৩. করোনার অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা লে-অফ চলবে না। শ্রম আইনের ধারা ৫ ও ১৯(৪)(৫) বিধি অনুযায়ী বদলিসহ সকল শ্রমিককে নিয়োগের তারিখ উল্লেখ করে নিয়োগপত্র পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে।
৪. প্রতিটি শিল্প এলাকায় পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু কর। শ্রমিক কল্যান কেন্দ্রসহ বর্তমান অব্যবহৃত অবকাঠামোসমূহ ব্যবহার করা।
৫. অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের তালিকা প্রণয়ন করে সহায়তা করা। করোনার কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের দুর্দশাগ্রাস্ত শ্রমিকদের এবং ক্ষুদ্র পুঁজির স্বকর্মে নিয়োজিত শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন খাতের কর্মহীন শ্রমিকদের নগদ অর্থ, খাদ্য দ্রব্যের রেশন সহায়তা করার উদ্যোগ নিতে হবে। চা ও রাবার বাগান শ্রমিকদের বাঁচার মতো মজুরি, মানসম্মত রেশন, চিকিৎসা এবং ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। চামড়া শিল্প ধবংসের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
৬. চিকিৎসক, নার্সসহ চিকিৎসা কর্মী, মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত সকল স্তরের কর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সিকিউরিটি সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, সড়ক ও নৌ পথে পণ্য পরিবহণে নিয়োজিত চালক, নাবিক, হেল্পার, মাল উঠা নামানোর শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, কারণ এই শ্রমিকরা আμান্ত হলে দেশের উৎপাদন ও পরিবহণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।
৭. প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সকল শ্রমিক কর্মচারীদের করোনাকালীন বিশেষ দুর্যোগ, ঝুঁকি ভাতা, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় এবং অসুস্থ থাকাকালে সবেতন বিশেষ ছুটি নিশ্চিত করতে হবে।
৮. শিল্পকারখানায় লে-অফ,ছাঁটাই বন্ধ করা। ব্যাংক বিমাসহ সকল প্রতিষ্ঠানে আউট সোরসিং বন্ধ করতে হবে। শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালার শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাসহ কালাকানুন বাতিল করতে হবে। গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, জাতীয় মজুরি কমিশন গঠন, বাজার দরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ জাতীয় নূন্যতম মজুরি ঘোষণা, শিল্প পুলিশ প্রত্যাহার, কারখানার ভিতরে বাইরে শ্রমিক নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। সংগঠন করা ও সমাবেশ করার স্বাধীনতা খর্ব করা চলবে না। শ্রমমন্ত্রণালয় গঠিত কমিটিকে শক্তিশালী এবং কার্যকর করার লক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়াতে হবে। কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর ও শ্রম আদালতকে কার্যকর করতে হবে এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনকারী মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
৯. করোনায় বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রবাসী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে তাদেরকে সহায়তা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, সরকারি, বেসরকারি সকল শ্রমিকদের জন ̈ রেজিস্ট্রেশন এর ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের রেশন, আবাসন, দুর্ঘটনা বিমা, পুনর্বাসন এর জন্য সমন্বিত উদ্যোগ চালু করতে হবে।

সভায় বক্তৃতা করেন স্কপের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ লেবার ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দা আজিজুন নাহার, আর্ন্তজাতিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান মজনু, শ্রমিক লীগ মহানগর কার্যকরী সভাপতি মোতালেব মিয়া, জেলা সাঃ সম্পাদক শেখ পীর আলী, শ্রমিক দলের মহানগর সাধারন সম্পাদক মো: মজিবর রহমান, জেলা সাঃ সম্পাদক খান সাইফুল ইসলাম, টিইউসি মহানগর সভাপতি এইচ,এম শাহাদাৎ, জেলা সভাপতি রঙ্গলাল মৃধা, রুস্তম আলী হাওলাদার, জেলা সভাপতি মুনির আহমেদ, সাঃ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দীন দিলু, সামাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সভাপতি জনার্দন দত্ত নান্টু, মহানগর সাধারন সম্পাদক আব্দুল করিম, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ মহানগর সভাপতি চাঁন মিয়া, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরি হাবিবুর রহমান, বিএল এফ নেতা মোসাঃ ডলি, লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক ফারুখ হোসেন, আকবর আলী, ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা মোঃ কামরুজ্জামান, ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ, ইটভাটা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এসএম গাজী মোস্তাফিজুর রহমান, বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মোঃ জসিম, ইনসাব, মামুন আরেফিন, রেল শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা কৃষ্ণ সরদার, রেল শ্রমিক দলের সোহেল হাওলাদার, হকার্স ইউনিয়নের মেজবাহ উদ্দীন, জাহাজী শ্রমিক সংঘের বাহারুল ইসলাম, রিক্সা ভ্যান শ্রমিকলীগের আসলাম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ারিং শ্রমিক ইউনিয়নের গাজী সালাউদ্দীন পিকু, আইনজীবী সহকারি সমিতির নেতামাহবুবুর রহমান,মটর গাড়ি গ্যারেজ ইউনিয়ন নেতা শেখ আইনুল হকসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। খবর বিজ্ঞপ্তি

খুলনা গেজেট/এ হোসেন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!