খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২৭ মে, ২০২৪

Breaking News

  বেন‌জির প‌রিবা‌রের আরও ১১৯ টি স্থাবর-অস্থাবর সম্প‌ত্তি ক্রো‌কের নি‌র্দেশ আদাল‌তের

পর্তুগালকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে মরক্কো

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পর্তুগালকে হারিয়ে কাতারে মরক্কোর রূপকথা অব্যাহত রইলো। সেই সঙ্গে প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল তারা। অথচ এই মরক্কোকে নিয়ে কেউই স্বপ্ন দেখেনি। আফ্রিকার একমাত্র দেশ হিসেবে এখনো টিকে রইলো অ্যাটলাস লায়নরা। মরক্কোর কাছে পর্তুগাল হারল ১-০ গোলে।

আগের ম্যাচের মতো এদিনও রোনালদোকে বেঞ্চ রেখে একাদশ সাজান ফার্নান্দো সান্তোস। কিন্তু প্রতি দিন কি আর নতুন চমক হয়? হলো না এদিনও। বিরতির আগে ইউসেফ এন-নেসারির গোলে লিড নেয় মরক্কো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নামলেন রোনালদো।

একটি গোলের জন্য মাথা খুটে মরলেন যেন। যোগ করা সময়ে এককভাবে এগিয়ে শটও নিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই আর কিছু হলোন। পর্বত-সমান মরক্কোর রক্ষণ ভাঙা দূরে থাকা আঁচড়ও পড়ল না। রোনালদোরা যখন হতাশায় ভাসছিলেন। তখন নতুন রূপকথার এক গল্প লেখা উচ্ছ্বাসে ভাসছে মরক্কো।

ম্যাচে দুই দলই হাই প্রেসিংয়ে শুরু করে খেলা। চতুর্থ মিনিটেই ফ্রি কিক থকে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় পর্তুগাল। তবে জোয়াও ফেলিক্সের হেড ঠেকিয়ে দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু। পরের মিনিটে প্রতি আক্রমণে পর্তুগিজ রক্ষণে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল আফ্রিকার দেশটি। তবে সে যাত্রায় বেঁচে যায় পর্তুগিজরা।

গোলের লক্ষ্যে দুই দলই প্রথম থেকে আক্রমণে চোখ রাখে। প্রথম ২০ মিনিটে সেট পিস ও লং বল থেকে একাধিকবার আতঙ্ক ছড়ায় পর্তুগাল। আর মরক্কো চেষ্টা করে ওয়ান টাচ ফুটবলের সৌন্দর্যে পর্তুগালকে চমকে দিতে। পাশাপাশি ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েও সুযোগ তৈরির চেষ্টা করেছে তারা। তবে সহজ সুযোগ বলতে যা বোঝায় তা পায়নি কোনো দলই। দুই দলই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করায় অ্যাটাকিং থার্ডের বদলে মাঝ মাঠেই খেলা হয়েছে বেশি।

৩১ মিনিটে ফেলিক্সের হাফ-ভলি মরক্কোর খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। রক্ষণে এদিন চোটের কারণে সেন্টার ব্যাক নায়েফ আগুয়ের্দ ও ফুল ব্যাক নুসাইর মাজরাউয়ির অনুপস্থিতি ভুগিয়েছে মরক্কোকে। তবে আক্রমণে বেশ সাবলীল ছিল তাঁরা।

৩৪ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে ডি-বক্সের ভেতর ফাঁকা জায়গায় বল পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি সেলিম আমাল্লাহ। তবে ওয়ান-টাচ ফুটবলের সৌন্দর্যে ৪২ মিনিটে ঠিকই এগিয়ে যায় মরক্কো। ইয়াহিয়া আত্তাতের ক্রসে শূন্যে ভেসে দারুণ এক হেডে অ্যাটলাস সিংহদের এগিয়ে দেন ইউসেফ এন-নেসারি। ৪৫ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে ব্রুনো ফার্নান্দেজের একক প্রচেষ্টা মরক্কোর পোস্ট কাঁপিয়ে বাইরে চলে যায়।

বিরতির পর শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয়। ৫২ মিনিটে মাঠে নামেন রোনালদো। নেমেই বাঁ প্রান্ত দিয়ে দারুণ একটি ক্রসও করেন। তবে সেটি থামিয়ে দেন বুনু। পর্তুগালের আক্রমণের চাপে এ সময় কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে মরক্কো। ৫৮ মিনিটে গনসালো রামোসের হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৬৪ মিনিটে ডি–বক্সের বাইরে থেকে ফার্নান্দেজের শট যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগাল রক্ষণে তেমন কোনো ভীতিই ছড়াতে পারেনি। ৬৮ মিনিটে ফার্নান্দেজের ক্রসে রোনালদো মাথা ছোঁয়াতে পারলে বদলে যেতে পারত ম্যাচের মোড়।

আক্রমণের পর আক্রমণে মরক্কোর রক্ষণকে নাকাল করেও কাজের কাজটি করতে পারছিল না পর্তুগাল। রোনালদো–ফার্নান্দেজদের কোনো প্রচেষ্টাই অ্যাটলাস পর্বত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আফ্রিকার দেশটির দেয়াল ভাঙতে পারছিল না। পর্তুগালের বৃথা চেষ্টাগুলোর মাঝেই ম্যাচ গড়িয়ে যাচ্ছিল গোধূলির দিকে। রোনালদোর বিশ্বকাপ স্বপ্নের বাতিটাও তখন ধীরে নিভে আসছিল। বিপরীতে নতুন এক ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকছিল মরক্কোকে। ৮৩ মিনিটে রোনালদোর থামিয়ে দেওয়া বলে বুলেট গতির এক শট নেন ফেলিক্স। কিন্তু সেই শট দারুণভাবে থামিয়ে দেন বুনু।

যোগ করা সময়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ওয়ালিদ শেদিরা। ১০ জনের মরক্কোকে ৬ মিনিট পেয়েও আর কাজে লাগাতে পারেনি পর্তুগাল। ১–০ তে হেরে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নেয়।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!